চট্টগ্রাম: রোববার সন্ধ্যায় নগরীর থিয়েটার ইনস্টিউটে (টিআইসি) মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেছেন নৌ কমাণ্ডার অধিনায়ক কমাণ্ডার এ ডব্লিউ চৌধুরী বীর বিক্রম বীর উত্তম।
বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি বলেন,আমাদের চেতনা ছিল দেশ স্বাধীন করতে হবে,যেকোন মূল্যে। নিজের জীবনের ত্যাগ দিয়ে হলেও।
এ ডব্লিউ চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান নেভি থেকে বেরিয়ে ৩০০ জন কমান্ডার নিয়ে কর্ণফুলী নদীতে অপারেশন জ্যাকপট হয়েছিল। এ অপারেশনের টার্গেট ছিল কর্ণফুলী নদী। উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রাম বন্দর,নদী,সমুদ্র অচল করে দেওয়া। পাকিস্তানীদের গোলাবারুদ,জাহাজ সব ধ্বংস করে দেওয়া।
“আমরা আমরা কোনো সেক্টরের ভেতরে যুদ্ধ করিনি। নৌ সেক্টর ছিল একেবারে ভিন্ন। আমাদের চূড়ান্ত গোপনীয়তার কারণে এখনও অনেকে নৌ বাহিনীর যুদ্ধকালীন অপারেশনগুলোর কথা জানেনা। ”
তিনি বলেন, সেসময় নৌ পথ ছাড়া সব রুট বন্ধ ছিল। তাই আমরা ৮জন সাবমেরিনার নিয়ে কর্ণফুলী নদীতে অপারেশন জ্যাকপট করেছি অত্যন্ত গোপনে।
“আমরা ৩০০জন কমান্ডার হ্যান্ড গ্রেনেড, ডেটোনেটরসহ আরো বহু অস্ত্র গোলা বারুদ নিয়ে ৭১ সালের ১৫ অগাস্ট অপারেশন জ্যাকপট করি। চট্টগ্রাম বন্দরের ৯টা জাহাজ ডুবে যায়। আমরা নিশ্চিত হই চট্টগ্রাম বন্দর আর ব্যবহার করা যাবেনা। ”
এ ডব্লিউ চৌধুরী বলেন, অপারেশন জ্যাকপট পৃথিবীর একমাত্র অপারেশন যেখানে নৌ পথে সরাসরি যুদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশের বাঙালীরাই এটা করে দেখিয়েছে।
“আমাদের কোন খেতাব দিয়ে এ স্বাধীনতার তুলনার হবেনা। এটা ছিল একটা মিরাকেল যে আমরা পাকিস্তানীদের মেরুদন্ড ভেঙে দিতে পেরেছি। আমরা প্রমান করেছি বাঙালী দুর্বল জাতি নয়। ”
নতুন প্রজন্মের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এ প্রজন্ম আমাদের চিনেছে। তারা আমাদের কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছে তাই আজকে কথা বলতে পারছি। আশা করি তারা মুক্তিযুদ্ধের চেয়েও বড় কিছু করে দেখাবে।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করে রক্তকরবী। আবৃত্তি প্রযোজনা স্মৃতি অম্লান পরিবেশন করে প্রমা আবৃত্তি সংগঠন।
বাংলাদেশ সময়:২২৪২ ঘন্টা, ২৮ডিসেম্বর,২০১৪