ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রথম হবেন, এমনটা ভাবেননি ডা. নাফিস 

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
প্রথম হবেন, এমনটা ভাবেননি ডা. নাফিস  মুহাম্মদ আদিবুল হক নাফিস।

চট্টগ্রাম: পাস করবেন-এই আত্মবিশ্বাস ছিল। কিন্তু প্রথম হবেন, এমনটা ভাবেননি মুহাম্মদ আদিবুল হক নাফিস।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অধীনে ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের এই শিক্ষার্থী।

ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ২০১৫-১৬ সেশনে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় তৃতীয় হয়েছিলেন নাফিস।

নবীন এই চিকিৎসক বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন পর শুরু হবে ইন্টার্নশিপ। এক বছরের এই সময়টা পার হলেই পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করা যাবে। করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর অনেকদিন ধরে হাসপাতালের ওয়ার্ডে যাওয়া-আসা নেই। এখন আবারও রোগীদের কাছাকাছি যাবো। একজন ইন্টার্ন এর কাছে সবগুলো বিভাগই সমান গুরুত্বপূর্ণ। এরপর পোস্ট গ্রাজুয়েশনের জন্য পড়বো।  

মুহাম্মদ আদিবুল হক নাফিসের বাবা ডা. আমিনুল হক এবং মা ডা. মেহনাজ নাসরিন। মা-বাবার অনুপ্রেরণায় তিনি ভালো ফলাফল করতে পেরেছেন মন্তব্য করে বলেন, মেডিক্যালের পড়ালেখায় অনেক চাপ থাকে। এই সময়ে পরিবারের সহযোগিতা পেলে ভালো ফলাফল করা সহজ হয়।

ভর্তিতে মেধা তালিকায় তৃতীয় হয়েও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে না যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার দাদার বাড়ি খুলনায় হলেও মা-বাবার ঘর বসতি চাকরি সূত্রে চট্টগ্রামেই। সে কারণে আমি এখানেই বেড়ে উঠেছি। পড়ালেখায় আটকে গেলে তাদের সহায়তা পাবো- এটা হবে বাড়তি পাওনা। সে কারণে পছন্দের তালিকায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) নাম দিয়েছিলাম ১ নম্বরে। এছাড়া চমেকের ডিগ্রির দাম রয়েছে বিদেশেও। এই কলেজের অনেক সাবেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছেন। চিকিৎসক হিসেবে তারা পেয়েছেন খ্যাতি’।

তিনি বলেন, করোনার সময় ক্লাস বন্ধ থাকায় ওয়ার্ডে যেতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। কয়েকবার ফাইনাল পরীক্ষা পিছাতে হয়েছে। তবে এসময়ে কলেজে নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হয়েছে, পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, ব্লক পোস্টিংও হয়েছে। সহপাঠীদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রেখেছি।  শিক্ষকরা সব ব্যাপারে পরামর্শ ও উৎসাহ দিয়েছেন। রুটিন করে পড়েছি। পরীক্ষা ভালো হওয়ায় পাস করার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম।  

নাফিসের মতে, যারা ফাইনাল প্রফে পাস করতে পারেনি, তাদের এখন হতাশ না হয়ে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। এখানে হার বলে কিছু নেই। একজন ভালো চিকিৎসক হওয়া আর প্রফে একবারেই পাস করা এক জিনিস নয়। মনোবল না হারিয়ে সাপ্লি পরীক্ষার পড়ালেখায় মন দেওয়া দরকার। সফলতা আসবেই।

নাফিস বলেন, এমবিবিএসের একেকটি প্রফেশনাল পরীক্ষার জন্য একেক রকম প্রস্তুতি নিতে হয়। ফার্স্ট প্রফের প্রস্তুতি এক ধরনের, দ্বিতীয় প্রফের প্রস্তুতি আরেক ধরনের। তবে সবগুলো প্রফের ক্ষেত্রে লেকচার ক্লাস করা গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রচুর পড়তে হয়। ক্লাসে শিক্ষকরা যা বলেন, সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়। ফাইনাল প্রফের সময় ওয়ার্ডে শিক্ষকরা যা বলেন, সেটা মনে রাখতে পারলেই পরীক্ষার সময় আটকানো যায় না। আমি সবগুলো ক্লাস নিয়মিত করেছি। ক্লাসের নোটগুলো দিয়েছি অনুপস্থিত সহপাঠীদেরও।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ এবং ইন্টার্ন ডাক্তার (শৃঙ্খলা ও আচরণ) বিধিমালা, ১৯৯৮ এর অধীনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের একটি পেশাগত আচরণবিধি রয়েছে। এই আচরণবিধি মেনে রোগীর সেবার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে বলেও জানান এই নবীন চিকিৎসক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২১
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।