ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বলীর হাটের আসবাব শিল্প  

উজ্জ্বল ধর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২
বলীর হাটের আসবাব শিল্প   ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: নগরের বহদ্দারহাট থেকে পূর্ব দিকে খাজা রোড হয়ে কিছু পথ গেলেই বলীরহাট। রাস্তার দু’পাশের অলিগলিতে চোখে পড়বে কাঠের ওপর তৈরি নিত্যনতুন নকশার আসবাবপত্রের সারি সারি দোকান।

ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এখানে নজরকাড়া আকর্ষণীয় ডিজাইনে আসবাবের ওপর নিত্যনতুন নকশার কারুকাজ করে যাচ্ছেন শত শত শ্রমিক, কারিগর। এখান থেকে সারা দেশের অনেক বড় বড় শো-রুমে সরবরাহ করা হয় ফিনিশড ও আনফিনিশড ফার্নিচার।
 

সরেজমিন জানা গেল, সেখানে বর্তমানে আড়াই হাজারেরও বেশি ফার্নিচারের কারখানা, শোরুম রয়েছে। বংশ পরম্পরায় বাকলিয়া এলাকার হাজার হাজার পরিবারের সদস্যরা এ ব্যবসা ও কাজে নিয়োজিত। আগে হাতুড়ি আর দেশি হাতিয়ার দিয়ে হাতে খোদাই করা নকশার ফুল তোলা হতো। এখন সেখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে কাঠের ওপর নকশা ও ফিনিশিংয়ের কাজ করা হয়। তাই আসবাব তৈরিতেও কম সময় লাগছে। শ্রমিক আর ব্যবসায়ীদের মতে আগে আসবাব তৈরি করে রাখলে ক্রেতার অভাব থাকত, আর এখন পণ্য তৈরির আগেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ।

নকশাযুক্ত কাঠের আসবাবের জন্য প্রসিদ্ধ এ বলীরহাটে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয়। স্থানীয় অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এখানকার শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে এ অঞ্চলকে একটি বিশেষ কাঠশিল্প পল্লীতে রূপান্তর করা খুবই সহজ। এখানকার কর্মরত শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দক্ষ মানবসম্পদ রফতানি করেও কোটি কোটি ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
                      
ব্যবসায়ী মোকতার আহদমদ বাংলানিউজকে বলেন, এখানে পার্বত্য এলাকা থেকে নদীপথে আসা কাঠ এখানকার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বড় কোম্পানিগুলোর মালয়েশিয়ান উড কাঠ এনে তৈরি করা আসবাব টিকে থাকে মাত্র ১০-১৫ বছর। আর এখানকার সেগুন, ফুলকড়ই কাঠের তৈরি আসবাব টেকসই কয়েক যুগ। বর্তমানে অর্ধলাখ লোক বলীরহাটের নকশাযুক্ত কাঠের আসবাব শিল্পের সঙ্গে জড়িত। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি দেশের মতো এ শিল্প থেকে কোটি কোটি ডলারের ফার্নিচার রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আমরা আয় করতে পারি।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে গড়ে ওঠা বলীরহাটের এ আসবাব শিল্পকে বিশেষ জোনের আওতায় এনে ‘কাঠ শিল্পপল্লী’ হিসেবে চিহ্নিত করে এখানকার আগে থেকে নিয়োজিত কারিগর, শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনবল তৈরি করে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার এখনই উপযুক্ত সময়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২২
ইউকেডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।