কলকাতা: টাকার অভাবে জ্বালানি তেল নেই আর তেলের অভাবে জলযান বিকল৷ এজন্য প্রায় ৪ মাস ধরে জলপথে নজরদারি কার্যত বন্ধ৷ এমনই এক সমস্যার মুখে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ৬টি উপকূল থানা।
২০১০ সালের শেষার্ধে রাজ্যের ৩টি জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে তৈরি হয়েছিল ৬টি উপকূল থানা৷ ২৬/১১-এর মুম্বাই হামলার পর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প অনুযায়ী ওই ৬টি থানা তৈরির টাকা পায় রাজ্য সরকার।
প্রতিটি থানা পায় ৩টি করে ফাস্ট ইন্টারসেপশন বোট, জিপ ও মোটরবাইক৷ উদ্দেশ্য ছিল, রাজ্যের উপকূল এলাকার জলপথে নজরদারি চালানো৷ দস্যুদের হাত থেকে জেলেদের রক্ষা করা, চোরাচালান বন্ধ করা এবং চোরাপথে জলপথে অনুপ্রবেশ ঠেকানো।
কিন্তু ৬টি উপকূল থানা উদ্বোধনের পর থেকে ২০১১ শেষ পর্যন্ত নজরদারির কাজে ব্যবহৃত স্পিড বোটগুলোর তেল বাবদ ৭৫ লাখেরও বেশি রুপি খরচ হয়ে গিয়েছে৷ পরিবর্তে বিল জমা দেওয়া হলেও মহাকরণ থেকে এখনও মেলেনি বকেয়া৷ তাই গত প্রায় ৪ মাস ধরে বোট চলাচল বন্ধ এবং ফলাফলস্বরূপ জলপথে নজরদারিও বন্ধ৷
প্রশ্ন উঠেছে, কেন বকেয়া মিলছে না? সরকারি যুক্তি, প্রকল্পের নিয়ম মাফিক তেলের টাকাও দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে প্রাথমিকভাবে রাজ্য সরকারকেই মেটাতে হয় বকেয়া বিল৷ পরে সেই বিল কেন্দ্রীয় সরকারেক পাঠালে টাকা পাবে রাজ্য সরকার৷
সরকারি কর্মকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্য সরকার আর্থিক সংকটে ভুগছে৷ তারই ফলশ্রুতি, বকেয়া ৭৫ লাখ রুপি না মেটাতে পারা৷ যার জন্য প্রশ্ন উঠছে, উপকূলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।
এদিকে, ইতিমধ্যেই রাজ্যে আরও ৮টি নতুন উপকূল থানা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটির জন্য নতুন জায়গা চিহ্নিত করে ফেলারও প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
কিন্তু সেখানেই প্রশ্ন যে, যেখানে পুরোনো থানাগুলোই নজরদারি চালাতে জলযান ব্যবহার করতে পারছে না তেলের অভাবে, সেখানে, নতুন থানা তৈরির পর সংকট কি আরও বাড়বে না? রাজ্য পুলিশের কর্মকর্তাদের মতে, সংকট কাটাতে পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে বকেয়া বিল প্রদানের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময় : ১২৪০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১২
আরডি
সম্পাদনা : অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর