ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

আজও অবহেলিত বিদ্রোহী কবির গ্রাম চুরুলিয়া

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১২
আজও অবহেলিত বিদ্রোহী কবির গ্রাম চুরুলিয়া

ইন্টারনেট আর ই-মেইলের যুগেও চরম অবহেলা আর অন্ধকারে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গ্রাম চুরুলিয়া।

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কয়লাখনি অঞ্চল জামুড়িয়ার ১০ কিলোমিটার উত্তরে চুরুলিয়া।

জলসেচ না থাকার কারণে এখন বর্ষার পানির ওপর নির্ভরশীল গ্রামের কৃষিকাজ।

জামুড়িয়া থেকে কবির গ্রাম যাওয়ার সড়কটি খানাখন্দে ভরা। সড়কে মাঝখানে বড় বড় গর্ত। কয়লা মাফিয়ারা তাদের সুবিধা মতো সড়কের বিভিন্ন স্থানে বানিয়েছে অস্থায়ী স্পিড ব্রেকার। চুরুলিয়া থেকে কাছের শহর জামুরিয়া যাওয়ার কোনো বাস রুট নেই। নিজস্ব গাড়ি আর মোটরবাইক ছাড়া এই মাত্র ১০ কিলোমিটার পথ হয়ে পড়েছে দুর্গম।

গ্রামের সড়ক আরও খারাপ। চৌধুরী পুকুর থেকে নজরুল একাডেমী পর্যন্ত সড়কটির হাল একই। যদিও একাডেমী ও বেসরকারি কয়লা কোম্পানি দু`তিনটি সড়ক বানিয়েছে। কিন্তু বাকি সড়কগুলোর বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সড়ক সংস্কার হয় না।

নেই কোনো নিষ্কাশন ব্যবস্থা। ফলে সড়কের পাশের বাড়ির নোংরা পানি সরাসরি সড়কেই জমা হয়। সড়কের কয়েকটি স্থানে নোংরা পানিতে তৈরি হয়েছে জলাশয় আর তাতে চড়ে বেড়াচ্ছে হাঁস। আবার কোথাও পাহাড় প্রমাণ জঞ্জাল।

চুরুলিয়ার পঞ্চায়েত প্রধান অমিতাভ বন্ধ্যোপাধ্যায় বলেন, বর্ধমান জেলা পরিষদ থেকে প্রায় নয় কোটি রুপির মতো সড়ক বাঁধানোর অনুমোদন হয়েছিল। এরই মধ্যে গ্রামের পাঁচটি পুকুরের পাড় বাঁধানোর কাজ। বারাবনির দোহামনি থেকে চুরুলিয়া গ্রাম পর্যন্ত পিচের সড়কের কাজ শেষ হয়েছে।

কিন্তু গ্রামের মূল সড়কটি না হওয়ার কারণে গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ। আর পাড় বাঁধানোর কাজ হয়েছে নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই গ্রামে কবি ও কবি স্ত্রী প্রমিলা দেবীর নামে থাকা একমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। যা এখন গরু ছাগলের বিচরণ ক্ষেত্র। বিগত এক বছর ধরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির কোনো চিকিৎসক তো দূরের কথা একজন স্বাস্থ্যকর্মী নেই।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বছর খানেক আগে একজন চিকিৎসক আসতেন। কিন্তু গ্রামের রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যান। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাতটি আবাসন আছে। সংস্কারের অভাবে সেগুলো ভেঙে পড়ছে। চলে গেছে দখলদারদের হাতে।

নজরুল একাডেমীর সম্পাদক কবির ভ্রাতুষ্পুত্র কাজী মোজাহার হোসেন বাংলানিউজকে এই বিষয়ে ফোনে বলেন, ‘বিগত বাম সরকারের আমলে আমরা একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছিলাম গ্রামের উন্নয়নের জন্য। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি গত বছর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সরেজমিনে পরিদর্শন করেছিলেন। এটিকে ২৫ শয্যার গ্রামীণ হাসপাতালে পরিণত করার দাবি করেছিলাম। কিন্তু আজও কিছুই হয়নি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১২
আরডি/সম্পাদনা: রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।