ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

জঙ্গলমহলে শান্তিপূর্ণ ভোট

রক্তিম দাশ. সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১১
জঙ্গলমহলে শান্তিপূর্ণ ভোট

কলকাতা: ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে শনিবার মাওবাদী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলের ভোটাভুটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।

এদিন রাজ্যের পঞ্চম দফার ভোট হয় জঙ্গলমহলের তিন জেলার একাংশ ও বর্ধমান জেলার একাংশে।

ভোট শুরু হয় সকাল ৭ টায়। শেষ হয় বিকেল ৫টায়।

ভোট দেওয়ার হার ৮২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

এর মধ্যে বর্ধমানের ১২টি, বাঁকুড়ার ৯টি, পুরুলিয়ার ৫টি ও পশ্চিম মেদিনীপুরের ৭টি আসন রয়েছে।

ভোট কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকেই লম্বা লাইন লক্ষ করা গেছে। তবে প্রচণ্ড গরমের কারণে অনেকেই সকালে ভোট দিতে চলে আসেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, বিকাল ৫টা পর্যন্ত জঙ্গলমহলের তিন জেলা বাকুঁড়ায় ৮৪ দশমিক ৬০, পুরুলিয়া ৭৮ দশমিক ৫৪, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৮৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।

অন্যদিকে, বর্ধমান জেলার শিল্পাঞ্চলে এ ভোটের হার ৮১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া এদিনের ভোট নির্বিঘ্নেই চলছে বলে জানায় ইসি।

তবে গতকাল সিপিএমের বিরুদ্ধে একপ্রস্থ অভিযোগ করেছেন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি মানস ভুইয়া।

তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বুথের বাইরে এসে বলেন, ‘সিপিএম বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র খারাপ করে, গতরাতে মদ মাংস খাইয়ে ভোট লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে। ’

জানা গেছে, পুরুলিয়ার পারা বিধানসভা কেন্দ্রের ১০৯ নম্বর বুথে প্রার্থীদের এজেন্টদের না দেখিয়ে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র চালু করে দেওয়া হয়।

এজন্য প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিধানসভা কেন্দ্রের ৫৯ ও ৫৯ এ কেন্দ্রে আজ পর্যন্ত কোনও নারী ভোটার ভোট দেননি। কারণ এ অঞ্চলটি মুসলমান অধ্যুষিত।

ধর্মীয় রক্ষণশীলতার কারণেই তারা ভোট দেন না। ইসি এখানে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে দু’টি বুথে সম্পূর্ণ নারী ভোটকর্মীদের নিয়োগ করেছিল। কিন্তু সকাল থেকে একজন নারীও ভোট দিতে আসেননি।

এখানকার নবগ্রাম ২৫৪/৩ বুথে ভোট বয়কট হয়েছে।

বর্ধমানের জামুরিয়ার ১৭৭ ও ১৭৮ নম্বর বুথে বেলাবাধে তৃণমূল এজেন্টকে মারধোর করা হয়। বুথে বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

এ ঘটনায় ১ জন সিপিএম সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

খ-ঘোষে ৫৮ নম্বর বুথে ভোটযন্ত্র খারাপ হয়ে যায়। বারবনির ৬৩, ৬৮ নম্বর বুথে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গলসীর ৬০ নম্বর বুথে প্রার্থীকে বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার জন্য প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এখানকার ১৮৩, ১৮৪ নম্বর বুথে ভাষা বুঝতে না পারার জন্য ভোটকর্মীদের সরিয়ে বাংলাভাষী ভোটকর্মী আনা হয়।

সেইসঙ্গে ১০২ নম্বর বুথে প্রচণ্ড গরমে প্রিসাইডিং অফিসার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

জামুরিয়ার ২টি বুথে তৃণমূলের এজেন্টকে মারধোর করার অভিযোগে ১ জন সিপিএম সমর্থক গ্রেপ্তার হন।

খড়গপুর গ্রামীণ কেন্দ্রে তৃনমূল এজেন্ট ও প্রার্থী বিলকিস খানমকে নিগ্রহের খবর পাওয়া গেছে।

রায়নার বেলাসরে ১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, নকল ভোটযন্ত্র নিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগে।

মাওবাদী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলে ভোট নির্বিঘ্নেই হয়েছে।

২৫টি ল্যান্ড মাইন নিষ্ক্রিয়করণ গাড়ি, ইনসাস, একে৪৭, এলএমজি নিয়ে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের মোটরবাইক নিয়ে টহলদারি চলছে- এ তিন জেলার প্রতিটি অঞ্চলে। আকাশ পথে চক্কর দিয়েছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার।

ডেবরা কেন্দ্র ২৪ নম্বর বুথে ভোটযন্ত্র খারাপ থাকায় ভোট শুরু করতে এক ঘণ্টা দেরি হয়।

এখানে বউলাসিনি গ্রামের ৩৩ নম্বর বুথের বাইরে একটি গাড়ি থেকে শূন্যে গুলি চালিয়ে এক নারী পালিয়ে যান।

তিনি মাওবাদী কি-না তা জানার জন্য ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এখানে এক সিপিএম কর্মী গুলিতে আহত হয়েছেন।

এই কেন্দ্রেরই হরিদ্রাপাত এলাকায় বহিরাগতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জন্য এক সিপিএম কর্মী আক্রান্ত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

কেশপুরের গোলারে বুথে বহিরাগতদের সরাতে সিআরপিএফ লাঠিচার্জ করে।

বাঁকুড়ায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ দের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বচসা হয়।

এ পর্বে উল্লেখযোগ্য প্রার্থী ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সূর্যকান্ত মিশ্র, পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস সভাপতি ডা. মানস ভুঁইয়া, বিধানসভা কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক জ্ঞান সিং সোহন পাল ও রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ও ডিএসপি প্রার্থী প্রবোধ সিনহা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।