ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ত্রিপুরায় কৃষির উন্নয়নে কাজ করছে উদ্যান গবেষণা কেন্দ্র (ভিডিও)

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
ত্রিপুরায় কৃষির উন্নয়নে কাজ করছে উদ্যান গবেষণা কেন্দ্র (ভিডিও) বিলিম্বি গাছে ফল এসেছে/ ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের ‘উদ্যান গবেষণা কেন্দ্র’। তাদের অন্যতম সফল গবেষণা হচ্ছে আলুর দানা বীজ উদ্ভাবন।

রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে নাগিছড়া এলাকায় রয়েছে ত্রিপুরা সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের গবেষণা কেন্দ্র। এটি প্রায় ৪০ হেক্টর জায়গাজুড়ে রয়েছে। রাজ্যের কৃষকদের স্বার্থে কাজ করছেন এখানকার গবেষকরা।

এখানে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, ফলমূল চাষ, বিজ্ঞানসম্মতভাবে উন্নত প্রজাতির গাছের চারা উৎপাদন, টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উন্নত, নতুন প্রজাতির ও রোগমুক্ত চারা উৎপাদন, মাশরুম চাষ, মাশরুমের রেণু উৎপাদন। এছাড়াও, কাজুবাদাম, নারিকেল এবং বিভিন্ন ধরনের মশলা চাষ সংক্রান্ত বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় বলে বাংলানিউজকে জানান গবেষণা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ।

তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের কৃষিদপ্তর এ গবেষণা কেন্দ্রটি চালু করেছিল। প্রাথমিক অবস্থায় এখানে নারিকেল, কলা, গোলমরিচ ও কাজুবাদাম নিয়ে গবেষণা করা হতো। একে সমৃদ্ধ করা ও কাজের পরিধি বাড়ানোর জন্য ভারত সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন পরিষদ আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে গবেষণার পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে।

এ গবেষণা কেন্দ্রের অন্যতম সফল এবং উদ্ভাবনী গবেষণা হলো দানা বীজ থেকে আলু চাষ, যা ট্রু পটেটো সিড (টিপিএস) নামে পরিচিত। বর্তমানে টিপিএস পদ্ধতিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যসহ বিদেশেও আলু চাষ হচ্ছে। সাধারণত ছোট আকারের এবং সুস্থ আলু জমিতে লাগিয়ে চাষ করা হয়। টিপিএস পদ্ধতিতে আলু গাছে ফুল থেকে ফল ধরিয়ে দানা বীজ উৎপাদন করা হয়ে থাকে এবং পরবর্তীকালে এ বীজ থেকে আলু চাষ করা হয়।

ড. রাজীব ঘোষ বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের বেশিরভাগ অংশে টিলা জমি রয়েছে, একে কী করে কাজে লাগিয়ে মানুষ— বিশেষ করে চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন, বিষয়টি চিন্তা করে কাজ করা হচ্ছে। ত্রিপুরার চিরাচরিত ফলের পাশাপাশি নতুন প্রজাতির ফলকে ত্রিপুরার আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মোসাম্বি লেবু, মাল্টা, ড্রাগন ফল রাজ্যের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চাষ করার ক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে। এমনকি রাজ্যে ব্যাপক হারে আপেল চাষের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করা হয়েছে। কী করে সবজি ও ফল চাষের খরচ কমানো যায়, তাও গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এজন্য ফলিমাঞ্চ পদ্ধতির সাহায্যে চাষ করা হচ্ছে স্ট্রবেরি, আনারস, ইত্যাদি। এতে করে চাষের জমিতে যেমন আগাছা সমস্যা কমবে, তেমনি মাটির আর্দ্রতা দীর্ঘদিন বজায় থাকায় অনেক কম পরিমাণ পানি সেচ দিতে হয়। এসব কারণে উৎপাদন আরও বাড়ে।

তাছাড়া, বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে এ গবেষণা কেন্দ্রে প্রদর্শনী প্লট রাখা হয়েছে, যেখানে নানা ধরনের সবজি ও ফলমূল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। কৃষকরা মাঠ পর্যায়ে এসে এসব চাষের পদ্ধতি দেখে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ফিরে যান। পরবর্তী সময় চাষিরা নিজেদের জমিতে তাদের এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চাষাবাদ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
এসসিএন/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।