ঢাকা: চূড়ান্ত বাজেটে বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি ও লভ্যাংশ আয়ের ওপর আরোপিত উৎসে কর প্রত্যাহারসহ ছয় প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু।
মঙ্গলবার (০৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর পল্টনের একটি হোটেলে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান তিনি।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, সরকার হয়তো এবার আমাদের পুঁজিবাজারে করারোপ করেনি। তবে আমাদের কিছু চাহিদা ছিল, সেটার বিষয়ে দৃষ্টি দেয়নি। এ বিষয়েও পরিকল্পনামন্ত্রী গত রোববার তার বক্তব্যে বলেছেন, আমাদের পুঁজিবাজার অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল উপকরণ। তাই আমাদের ৬টি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।
অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, একটি কার্যকরী বন্ড বাজার অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যদি সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা যায় তখন একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে। কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে লভ্যাংশের ওপর কর এক ধরনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের করারোপন। লভ্যাংশের ওপর উৎসকর চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচিত হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির প্রধান আয় (টার্নওভার) হচ্ছে কমিশন। যদি বেশি হারে কর নেওয়া হয় তবে ট্রেকহোল্ডারদের পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হবে। তাই ট্রেকহোল্ডারদের লেনদেনের উপর উৎসে কর ০.০৫ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ শতাংশ করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া এসএমই বোর্ডের অধীনে তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানির করপোরেট কর হার ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য ন্যূনতম ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। এতে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানি স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার হ্রাস করতে হবে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত উভয় কোম্পানির ভ্যাট হার ১৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার হ্রাস করে ১০ শতাংশ করার সুপারিশ করছি।
শেয়ার মার্কেট অর্থনীতির মূল হাতিয়ার হবে উল্লেখ করে ডিএসই চেয়ারম্যান আরও বলেন, দুটি কারণে পুঁজিবাজার পড়েছে, করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। সেই সময় আস্থাহীনতা বাজারে কাজ করেছে, তবে মানুষ বের হয়ে যায়নি, এখনো তারা বাজারের দিকে তাকিয়ে আছে, মানুষ সুযোগের অপেক্ষায় আছে। তাই এটা ডিএসই একা দূর করতে পারবে না। সকলের সহায়তা লাগবে। পুঁজিবাজার এগিয়ে নিতে ছোট্ট ছোট্ট বিনিয়োগকারী দিয়ে চলবে না, এটাকে এগিয়ে নিতে বড় বড় বিনিয়োগকারী লাগবে এবং আগামী দিনে শেয়ার মার্কেট অর্থনীতির মূল হাতিয়ার হবে। তবে পুঁজিবাজার একা চলতে পারবে না, সকলের সহযোগিতা লাগবে, এটা এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে যাবে এটাকে কেউ ধরে রাখতে পারবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২৩
এসএমএকে/এমজেএফ