ঢাকা: হলমার্ক, ডেসটিনি, বেসিক ব্যাংকের অনিয়মের সঙ্গে আমলারাই জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী।
বুধবার(৩১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ভয়েস আয়োজিত ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দুই একজন বাদে অধিকাংশ মন্ত্রীর কোন ক্ষমতা নেই। সচিব আমলারাই সবকিছু করেন। মন্ত্রী ফাইল যেভাবে ফেলে রাখেন সেভাবেই পড়ে থাকে। অধিকাংশ মন্ত্রী কিছুই জানেন না। হলমার্ক, ডেসটিনি, বেসিক ব্যাংকে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে তার সঙ্গে আমলারাই জড়িত।
তিনি আরও বলেন, সমাজ পরিবর্তন হয়নি। তাই যে চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে তার জন্য আমাদের আহাজারি করতে হয়। দায়িত্ব সকলের কিন্তু যে যখন দায়িত্বে থাকেন তখন তিনি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন না। যে কারণে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।
সেমিনারের সহযোগী আয়োজক হিসেবে ছিলো- সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান-সুপ্র, তথ্য অধিকার আন্দোলন, ইক্যুইটিবিডি ও অনলাইফ নলেজ সোসাইটি।
ভয়েস’র নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ পরিচালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, ইক্যুইটিবিডি’র প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম রেজা, সিনিয়র সাংবাদিক সেলিম সাজ্জাদ, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা যে যা বলি প্রত্যেকের সকল তথ্য প্রকাশ করা হলে কোন পরিবার টিকবে না, কোন সংসার টিকবে না। তাই এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা হবে এবং রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। ব্যক্তিকে অবাধ স্বাধীনতা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি ভোট দিচ্ছি নৌকায় অথবা ধানের শীষে। তার মানে এই নয় ভোট দিয়ে তাকে আমি যা খুশি তা করার অনুমতি দিয়েছি। একজন ওসি যাকে খুশি গ্রেফতার করবেন এটি কোন বিধান না।
ভয়েস’র নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, মোবাইলের সিম নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কাজে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত সকল তথ্য দিয়ে থাকি। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় এই তথ্যগুলো তৃতীয় পক্ষের কাছে চলে যাচ্ছে। এভাবে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার অভাবে অনেকে বিভিন্নভাবে হয়রানি হচ্ছেন। অনেক সময় মোবাইল রিসার্চ’র দোকান থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে নারীদের বিরক্ত করা হচ্ছে। এতে নারীর অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অনেক নারীকে ব্লাকমেইল করা হয়েছে, মোবাইল কল রেকর্ড’র মাধ্যমে।
ইক্যুইটিবিডি’র প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম রেজা বলেন, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় এরইমধ্যে অনেকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। শাসক গোষ্ঠী রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য অনেক কিছুই করতে পারেন। কিন্তু শাসক দল যখন বিরোধী দলে যাবেন তখন নিজের তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে বুঝবেন এর ক্ষতি কি। রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। তা না হলে নিজের ঘাড়ে যখন যাবে তখন বুঝবেন।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, দেশে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য কোন আইনি কাঠামো নেই। যখন কাওকে ছোট করার প্রয়োজন হচ্ছে তখনই রাষ্ট্র তার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করছে। সাধারণের প্রয়োজনে জন্য কোন তথ্য প্রকাশ করা হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪