ঢাকা: পোশাকের বাইরের বিভিন্ন উপকরণ তৈরির মেশিন ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন তরুণ উদ্যেক্তা রফিকুল ইসলাম। এক সময়ে পেয়েও গেলেন মনের মতো মেশিন।
ওই মেশিন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফেরার সময়ে জানালেন সন্তুষ্টির কথা। রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম, ঠিক তেমনি তথ্য পেলাম। উন্নতমানের প্রযুক্তি নির্ভর মেশিনের ঠিকানা পাওয়ায় অনেক ভালো লাগছে।
‘গার্মেন্টটেক’ ‘ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিকস সোর্সিং ফেয়ার’ ও ‘গ্যাপেক্সপো-২০১৬’ এক সঙ্গে এই তিন প্রদর্শনীর আয়োজকদের নেক্সট এক্সেসরিজ প্রতিষ্ঠানের এই কর্ণধার সাধুবাদও জানালেন।
রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী গত বুধবার (১৩ জানুয়ারি) শুরু হয়ে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) শেষ হয়। আইসিসিবি’র চারটি বড় বড় হলে ছিল বিভিন্ন মেশিনারিজের প্রদর্শন করা হয়।
রফতানি বাণিজ্যকে বহুমুখী এবং সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
পোশাকের কাপড় কাটার মেশিনারিজ নিয়ে প্রদর্শনীতে হাজির হয়েছিল উইনটেক্স রিসোর্সেস।
এ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার (সেলস) কাজী ওয়াস বললেন, আড়াই শতাধিক ব্যবসায়ী উইনটেক্স রিসোর্সেস এর প্যাভিলিয়ন ভিজিট করেছেন। সংখ্যার দিক দিয়ে হিসাব করলে অবশ্যই অনেক বড় সংখ্যা। বলা যেতে পারে টি-টিয়েন্টিতে ছক্কার পর ছক্কা। প্রদর্শনীতে আমরা খুবই সন্তুষ্ট।
গার্মেন্ট শিল্পে কতো আধুনিকতা ও প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে তার প্রমাণও মিললো এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে। এক ছাদের নিচে গার্মেন্ট সংশ্লিষ্ট যাবতীয় উপকরণের সমাহার দেখে চোখ কপালে উঠবে সবার।
আর প্রতিটি প্যাভিলিয়ন ও স্টলে তো কর্মীদের তথ্য সরবরাহ ছিল চোখে ধরার মতো। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একেবারে প্রধান কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সবাই দর্শনার্থীদের নিজেদের পণ্য উপস্থাপন করতে রীতিমতো ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
শুধু যে গার্মেন্টস শিল্পে পোশাক তৈরি হয় না, বরং এই পোশাক তৈরিতে যে কতো ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার করতে হয় তারও দেখা পাওয়া গেলো এ প্রদর্শনীতে। এছাড়া দেশ-বিদেশের গার্মেন্টস সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিও ছিল অনেক বেশি।
আয়োজকরা জানান, এ প্রদর্শনীতে দেশি ও বিদেশি প্রায় ৩০০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। ৭ম বারের মতো এ প্রদর্শনীতে প্রায় ৪৫০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন ছিল। এতে ভারত, চীন, পাকিস্তান, তাইওয়ান, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, দুবাইসহ ৩০টি দেশ অংশগ্রহণ করে।
এসব স্টলে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিং পণ্যের মেশিনারিজ, কাঁচামাল এবং গার্মেন্টের এক্সেসরিজ এবং প্যাকেজিং শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করা হয়। এতে প্রায় ২০ হাজারের বেশি ক্রেতা, বিক্রেতা ও দর্শনার্থী অংশগ্রহণ করেন।
প্রদর্শনীটি যে শুধু ব্যবসার জন্যই নয়, এখানে অনেক কিছু শেখার ও জানার আছে তা জানালেন গার্মেন্ট সেক্টরে চাকরিজীবি দেলেয়োর হোসেন ও মকসুদ।
তারা বলেন, গার্মেন্ট ব্যবসায়ে চাকরি করতে গেলেও বিভিন্ন বিষয়ে পরিকল্পনা জমা দিতে হয়। অনেক প্রশ্নের উত্তর প্রস্তত রাখতে হয়। এছাড়া এসব বিষয়ে পরিকল্পনা জমা দিতে হয়। এ কারণে প্রদর্শনীতে এসে এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করলেন। যা চাকরির ক্ষেত্রে কাজে লাগবে।
আগামীতে আরও উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর ও আধুনিকতায় এমন আয়োজন হবে- এ প্রত্যাশাও জানালেন দর্শানার্থী, ক্রেতা ও বিক্রেতা।
সার্বিক বিষয়ে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বিজিএপিএমইএ’র সভাপতি রাফেজ আলম চৌধুরী বলেন, এক ছাদের নিচে গার্মেন্ট শিল্পে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেক্টরের মেশিনারিজের প্রদর্শনী সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সবাই স্বত:স্ফুর্ত ছিলেন। ক্রেতা, বিক্রেতা ও দর্শনার্থী সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
তিনটি প্রদর্শনী ভিন্ন ভিন্ন নামে হলেও সব কিছু ছিল কিন্তু পোশাক শিল্পকে কেন্দ্র করেই।
বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রদর্শনীর পর্দা নামে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল জ্যাকব, এফবিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করা কো-স্পণ্সরস, বেস্ট সেলস ইন গ্যাপেক্সেপো ও আউটস্ট্যান্ডিং পারফরমেন্সের জন্য ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের ইংরেজি নিউজ প্রেজেন্টার জসিতা রহমান।
আর গত বুধবার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
একে/এএসআর
** ‘বাংলাদেশের ক্ষতি করতে প্রতিদ্বন্দ্বীরা টিআইবিকে অর্থ দিচ্ছে!’
** প্রিন্টিং-প্যাকেজিংয়ের সম্পূর্ণ সমাধান জিসানে