বাণিজ্য মেলা থেকে: সকাল থেকেই বইছে মাঘ মাসের হিমেল বাতাস। তবে এই বাতাস আটকে রাখতে পারছে না মেলামুখী দর্শনার্থীদের।
পছন্দের ও প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ঘুরছেন বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টলে। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) ছুটির দিনে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীদের এই সমাগমে উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নিয়েছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়।
প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে মূল্যছাড় পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। তবে অনেক বিক্রেতা প্রতারণার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আয়োজকরা জানান, ছুটির দিন হওয়ায় মেলার চিত্রই বদলে গেছে। প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু শুক্র ও শনিবারে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়।
দিনাজপুর থেকে শাহরিয়ার এসেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছরই মেলায় আসার চেষ্টা করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে খুব উপভোগ করি। এছাড়া প্রয়োজনীয় কিছু পণ্যও কেনা যায়।
বিভিন্ন প্যাভিলিয়নে বিক্রেতাদের আচরণ কেমন- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেশের পরিচিত সব ব্র্যান্ডের প্যাভিলিয়নে বিক্রেতাদের আচরণ অনেক ভালো। তারা বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরছেন। কিন্তু কোনো কোনো স্টলের দোকানি ক্রেতাদের ব্ল্যাকমেইল করার চিন্তা মাথায় রেখে কথা বলছেন। তবে এদের সংখ্যা অনেক কম।
মাইদুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী দোকানি ক্রেতাদের বোকা বানিয়ে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করছেন উচ্চ দামে।
মিরপুর থেকে আসা রাহিতুল ইসলাম বলেন, একেবারে অপরিচিত ব্র্যান্ডের একটি ৫০০ মিলিলিটারের শ্যাম্পুর দাম চাইলো ৬০০ টাকা। কিনবো না বলার পরও, আমাকে দরদাম করতে বলে জোর করতে থাকেন বিক্রেতা।
কেমন দেখছেন বাণিজ্য মেলা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওমনি আইটি প্রতিষ্ঠানের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সুফিয়া বেগম বলেন, ভালো। তবে আরও গোছালো হলে বেশি ভালো হতো।
তিনি বলেন, মেলায় যদি একটি ম্যাপ থাকতো, যেখান থেকে কোথায় কোন শ্রেণির স্টল আছে সহজেই বোঝা যাবে, তাহলে হাতের নাগালে সবকিছু পাওয়া যেতো। যেমন ধরুন, একটা কর্নারে শুধু ফার্নিচার পাওয়া যাবে, আবার আরেকটি কর্নারে গেলে খাবারের স্টল পাওয়া যাবে, যা ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের মাধ্যমে জানা যাবে।
পরিবারের দেড় বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে মেলা ঘুরে দেখছিলেন জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, প্রতিবছরই মেলা উপলক্ষে আমাদের একটা পরিকল্পনা থাকে। সকাল থেকে বিকেল পর্ন্ত ঘুরবো। কিছু পছন্দের ও প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে বাড়ি ফিরবো।
মেলা উপলক্ষে শিশুদের জন্য খেলার স্থানও রয়েছে। সেখানে শিশুদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকিও বেশ ভালো বলে জানালেন মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মাদ রেজাউল করিম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কিছু অভিযোগ আছে। তবে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবো।
যারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন, তাদের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর অফিসে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৬
একে/আরএম