সাতক্ষীরা: চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে আম রফতানির পরিমাণ কমেছে। গত মৌসুমে যেখানে ২৩ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়েছিল, সেখানে চলতি মৌসুমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে সাড়ে ২১ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়েছে।
রফতানির পরিমাণ কমার কারণ হিসেবে কৃষি বিভাগ বলছে, মৌসুমের শুরুতেই ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জেলায় এ বছর আমের উৎপাদন কমেছে। প্রয়োজনের সময় বৃষ্টি না হওয়ায় আম পেকেছে অন্য বছরের তুলনায় অনেক আগে। এছাড়া মৌসুমের শুরুতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মুকুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরায় এবার তুলনামূলকভাবে কম আম উৎপাদিত হয়েছে। রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোও সব প্রক্রিয়া যথাসময়ে সম্পন্ন করতে না পারায় চলতি মৌসুমে আম রফতানির পরিমাণ কমেছে।
কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহসীন আলী বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো কলারোয়া উপজেলা থেকে ১৮ মেট্রিক টন আম ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও লন্ডনে রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে ৭ মেট্রিক টন হিমসাগর, ৪ মেট্রিক টন ল্যাংড়া ও ৭ মেট্রিক টন আম্রপালি আম রফতানি হয়েছে।
বাকি সাড়ে তিন মেট্রিক টন আম সাতক্ষীরা সদর উপজেলা থেকে ইতালি ও মধ্যপ্রাচ্যে রফতানি হয়েছে। যেখানে গত মৌসুমে একমাত্র উপজেলা হিসেবে সাতক্ষীরা সদর থেকে ২৩ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়েছিল।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, স্বাদে, মানে ও গুণে অনন্য হওয়ায় সাতক্ষীরা থেকে আম রফতানির ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। কিন্তু এবার খারাপ আবহাওয়ার কারণে ও বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম বেশ কিছুদিন আগে পাকে। নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাকায় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যাশিত পরিমাণ রফতানি করতে পারেনি। এছাড়া শেষ সময়ে এসে আমদানিকারকদের নানা শর্ত রফতানিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর আম পেড়ে ট্রাকে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরে সেখানে প্যাকেটজাত করে রফতানি করা হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে শেষ সময়ে এসে শর্ত দেওয়া হয় যে, আম পেড়ে স্থানীয়ভাবে প্যাক করে কাভার্ড ভ্যানে সিলগালা করে ঢাকায় পাঠাতে হবে। কিন্তু এ প্রস্তুতি না থাকায় ও আম আগে পেকে যাওয়ায় অধিকাংশ চাষি আম পেড়ে আগেভাগেই স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেন।
তবে, আগামী বছর থেকে চাষিদের সঙ্গে আগেই রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চুক্তি করানোর চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগ। এতে চাষিরা যেমন হতাশা থেকে মুক্তি পাবেন, তেমনি রফতানির পরিমাণও বহুগুণে বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন কাজী আব্দুল মান্নান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৬
এসআই/এএসআর