ঢাকা: ‘ঈদে যে বেচা বিক্রি হওয়ার কথা ছিলো তেমন বিক্রি হচ্ছে না। বিক্রি হবে কি করে? রাস্তা ঘাট ভালো না।
কথাগুলো বলছিলেন মৌচাক মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. হুমায়ুন কবির। এবারের ঈদের বেচা বিক্রি নিয়ে হুমায়ুনের মতো হতাশায় ভুগছেন রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ী।
১৫ দিন অতিবাহিত হয়েছে রোজার। রাজধানী জুড়ে শুরু হয়েছে ঈদের মার্কেট। অভিজাত বিপণীবিতান থেকে শুরু করে রাস্তার ফুটপাত পযর্ন্ত সব স্থানেই ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে এত জমজমাট ঈদ শপিং এর মধ্যেও ভালো নেই মৌচাক মার্কেটের দোকানদাররা।
মঙ্গলবার (২১ জুন) রাজধানীর মৌচাক মার্কেটে ঈদকে কেন্দ্র করে রকমারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। তবে মার্কেট ঘুরে ঈদ শপিং এর আমেজ পাওয়া গেলেও জমজমাট বেচাবিক্রির উপস্থিতি চোখে পড়েনি। এমনকি ফাঁকা দোকানেও অনেক ব্যবসায়ীকে গালে হাত দিয়ে বসে থাকে দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের কয়েকদিন আগে মৌচাক মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ বলে হাইকোর্টের রায় দিয়েছে। একই সঙ্গে ফ্লাইওভারের ধীরগতির কাজ, খানাখন্দে ভরা ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা, তীব্র যানজট এসব কারণে এবারের ঈদে আশানুরূপ বেচা বিক্রি হচ্ছে না। এছাড়া বৃষ্টি হলে এখানে ভযাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসব কারণে ক্রেতারা ভয়ে এদিকে পা মারাতে চান না। ফলে বেচা বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না।
বেচা বিক্রি নিয়ে হতাশ মো. হুমায়ুন কবির জানান, আগে আমাদের এখানে দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতারা মার্কেটে আসতো। এখন যানজটের ভয়ে আর আসে না। আসবে কি করে, যে রাস্তা! বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা পড়তে পারে। যারা আশপাশে থাকে তারাই এখানে শপিং করতে আসছে। ফ্লাইওভারের কাজ শুরুর পর থেকে ব্যবসা তেমন ভালো হচ্ছে না।
ইস্কাটন থেকে শপিং করতে আসা ফাহিমা রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আজকে রোদ পড়েছে বলে মৌচাকে আসলাম। বৃষ্টি হলে এখানে রাস্তার যে অবস্থা সৃষ্টি হয়। মার্কেট করার নাম নেওয়া দুষ্কর। সেই সঙ্গে যানজট তো লেগেই আছে। ইস্কাটন থেকে আসতেই এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।
মৌচাক মার্কেটের সুলতান নামে এক বিক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঈদের আগে মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ বলে আমাদের পেটে লাথি মরার কি দরকার ছিলো। ঈদের পরে রায় দিলেই তো হত। এবার যে বেচা বিক্রি তাতে করে মালিক তো এবার আমাদের বেতন দিতে পারবে না। বোনাস তো দূরের কথা। এই ফ্লাইওভার আমাদের ব্যবসার ১২টা বাজিয়ে দিয়েছে।
মৌচাক মার্কেট ঘুরে বিক্রেতাদের অভিযোগের সত্যতা কিছুটা পাওয়া গেলেও অন্য সময়ের তুলনায় ক্রেতার উপস্থিতি যে বেশি এ কথাও স্বীকার করেন বিক্রেতারা।
মৌচাক মার্কেটে যেমন রয়েছে একদরের দোকান, তেমনি রয়েছে দরদাম করে কেনার দোকানও। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাচ্চাদের পোশাকের বেচা-বিক্রি ভালো হচ্ছে। এছাড়া তরুণ তরুণীদের বিভিন্ন ডিজাইনের থ্রি-পিসও ভালো বিক্রি হচ্ছে ঈদ উপলক্ষে। এখানে শিশুদের সালোয়ার কামিজ, গেঞ্জি, শার্ট, প্যান্ট, স্কার্ট, টপস, মেয়েদের প্যান্ট, শার্ট পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া কাঞ্জিবরন, কাতান,জামদানি, তাঁতের শাড়িও পাওয়া যাচ্ছে তৃতীয় তলায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ২১ জুন, ২০১৬
এমসি/আরঅাই