শিলিগুড়ি বিবিআইএন বিজনেস এক্সপো থেকে: ভারতের শিলিগুড়িতে চলছে বিবিআইএন বিজনেস এক্সপো-২০১৬। এখানে বাংলাদেশ থেকে ২০টিরও বেশি স্টল তাদের বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে অংশ নিয়েছে।
এরমধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম টেক্সটাইল গ্রুপ ওয়েল গ্রুপও তাদের ফুড আইটেম নিয়ে এখানে এসেছে।
ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের আয়োজনে শিলিগুড়িতে তিন দিনব্যাপী এ বিজনেস এক্সপোর দ্বিতীয় দিনে বাংলানিউজ কথা বলে ওয়েল গ্রুপের সিইও সাঈদ নুরুল ইসলামের সঙ্গে।
তিনি জানান বিবিআইএন নিয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আশা-প্রত্যাশার কথা।
সাঈদ নুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ-ভারত-ভুটান-নেপাল (বিবিআইএন) নিয়ে যে বিজনেস ফোরাম করার চিন্তা, তা খুবই ইনোভেটিভ কনসেপ্ট। চার দেশ মিলে যে বিজনেস ফোরামের চিন্তা এটা খুবই ভাল আইডিয়া। এতোদিন আমরা শুধু শুধু সার্কের পেছনে সময় নষ্ট করেছি। এট ঠিক যে সার্ক অনেক বড় প্লাটফর্ম। এটা সাব-রিজিওনাল প্লাটফর্ম, যার সঙ্গে বাংলাদেশের খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
বাংলাদেশের ১৬ কোটি, নেপালের ৮ কোটিসহ সব মিলিয়ে ৩০ কোটি মানুষের যে কমন বাজার, সেটা সবার জন্য খুবই ভাল। কিন্তু এখানে সফলতার ব্যারিয়ারটা (বাধা) রাজনৈতিক। তাই এটাকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরই এগিয়ে নিতে হবে। উদ্যোগটা এগিয়ে গেলে আমাদের জন্যই ভাল।
নুরুল ইসলাম বলেন, বিবিআইএন ৩০ কোটি মানুষের কমন বাজার। এ উদ্যোগের ভাল শুরু হেয়ছে। এটাকে স্টার্টিং পয়েন্ট বলতে পারি। স্টার্টিং পয়েন্ট যে সবসময় ভাল হবে বা ১০০ ভাগ সফল হবে, এটা আমি বলবো না। তবে এটাকে আমরা ভালভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
এফবিসিসিআই’র এ সদস্য বলেন, আমরা এ উদ্যোগটাকে হাইলাইট করছি। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা যদি এটাকে এগিয়ে নিয়ে যায় তাহলে ভাল হবে। কারণ এখানে মেইন স্টেকহোল্ডার কিন্তু আমরা। সার্কে কিন্তু মেইন স্টেইকহোল্ডার আমরা নই। তাই আমাদের স্মার্টলি চিন্তা করতে হবে। সাব-রিজিওনাল কো-অপারেশন যদি ঠিকভাবে করতে পারি তাহলে এ উদ্যোগ সফল হবে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকেই এ উদ্যোগ সফলে এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা যদি এগিয়ে না আসে তবে এ উদ্যোগ সফল হবে না। বিবিআইএন খুবই চমৎকার চিন্তা। আমরা এটাকে ধারণ করছি। এটাকে মোটামুটি শুরু বলা যায়। এফবিসিসিআই-আইসিসি এটাকে সামনে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুল্ক ব্যারিয়ার তেমন কোনো সমস্যা না। এদেশে বাংলাদেশের প্রায় ১০০ পণ্য শুল্কমুক্ত। এখানে মূল সমস্যাটা অন্যখানে। আমাদের পণ্য এক্সপোর্টর ক্ষেত্রে মূল সমস্যাটা হয় টেস্টিং। যেহেতু বাংলাদেশের বিএসটিআই এর পরীক্ষা এখানে গ্রহণ করা হয় না, তাই এখানে কোনো পণ্য টেস্ট করতে হলে কলকাতা পাঠাতে হয়। সেক্ষেত্রে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়। কোনো পচনশীল পণ্য থাকলে ক্ষতি হয়ে যাবে।
‘তবে, বিএসটিআইয়ের টেস্ট যদি এরা গ্রহণ করে তাহলে বিষয়টা আরও সহজ হবে। আপনি দেখেন এসডিএস এর টেস্ট রিপোর্ট সারাবিশ্ব গ্রহণ করছে। ’
ওয়েল গ্রুপের সিইও নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রচুর সময় নষ্ট করেছি সার্কের পেছনে ঘুরে। সার্ক কিন্তু আমাদের কিছুই দেয়নি। এখন যে সাব-রিজিওনাল ফোরামটা করা হয়েছে, সেটাকে ক্যারি ফরওয়ার্ড করা যায়, তাহলে সবাই সুফল পাবে। শুধু সভা-সেমিনার করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না।
‘মনে রাখতে হবে, এটা বাংলাদেশের জন্য গুড মার্কেট, তবে সহজ নয়। এখানে এসেই যে কোনো কোম্পানি জায়গা করে নেবে, তা সহজ নয়। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশের বেশ কিছু কোম্পানি এখানে ভালোভাবে ব্যবসা করছে। ’
পর্যটন খাত নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পর্যটন ইজ এ পার্ট অব বিজনেস। এটাকে আমরা প্রোপারলি সেল করতে পারছি না। তারা কিন্তু আমাদের বলছে আপনারা দার্জিলিং যান, সিকিম, নেপাল যান। আমরা কিন্তু তাদের সেভাবে ইনভাইট করছি না। আমরা দেশের পর্যটনকে হাইলাইট করছি না। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের পারস্পরিক কো-অপারেশন আরও বাড়াতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) কলকাতার ললিত ওবেরয় হোটেলে সার্কভুক্ত চারটি দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এ বিজনেস ফোরামের উদ্বোধন হয়। পরদিন (১৫ জুলাই) শিলিগুড়িতে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী বিবিআইএন বিজনেস এক্সপো। বিবিআইএনভূক্ত ৪ দেশের প্রায় ৬০টি স্টল এক্সপোতে অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
এসএইচ/এইচএ/
**বিবিআইএন’র চার দেশে হবে ইকোনমিক জোন