খুলনা: খুলনা কর অঞ্চলের ২২টি সার্কেলে মোট টিআইএন ধারী (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) করদাতার সংখ্যা দুই লাখ ৪০ হাজার ৩২৭ জন। এসব করদাতার কাছ থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এক হাজার ৪৪০ কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে এক হাজার ১৫৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়।
আগামী ১ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় আয়কর মেলাকে সামনে রেখে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে এ তথ্য জানান খুলনা কর কমিশনার (আপিল) প্রশান্ত কুমার রায়।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে খুলনার কর ভবনে দেওয়া সাক্ষাতকারে প্রশান্ত কুমার রায় জানান, সপ্তাহব্যাপী এ মেলার সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ২৪ থেকে ৩০ নভেম্বর আয়কর সপ্তাহ এবং ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালিত হবে। ওইদিনই রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন।
মেলা প্রসঙ্গে কর কমিশনার বলেন, মেলায় ৩০-৩৫টি সেবাদানকারী বুথ থাকবে। কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন ৭০ জন। মেলায় রিটার্ন ফরম জমা দেওয়ার জন্য সিনিয়র সিটিজেন (প্রবীণ নাগরিক), নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কাউন্টার থাকবে। রিটার্ন ফরম পূরণে সহায়তার জন্য হেলপ ডেস্ক, সোনালী/জনতা ব্যাংকের বুথ থাকবে। মেলায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সিসি ক্যামেরার পাশাপাশিআইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
এছাড়াও মেলায় আয়কর অধিক্ষেত্র সংক্রান্ত তথ্য এবং আয়কর আইন বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া হবে। জনগণের সার্বিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে মাইকিং,পোস্টারিং, প্রচার তোরণ, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার, ব্যবসায়ী নেতাদেরসঙ্গে বৈঠক, কর আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে।
খুলনায় করদাতার সংখ্যা বাড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভাগের করদাতার সংখ্যার পাশাপাশি বাড়ছে কর আদায়ের পরিমাণও। কর মেলা হওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে ভীতি কেটে গেছে। যার কারণে গত অর্থবছরের চেয়ে এবার কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ১৮২ কোটি টাকা, আদায় হয় এক হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।
তিনি জানান, খুলনা বিভাগের ১০টি সিভিল জেলা নিয়ে কর অঞ্চল-খুলনা গঠিত। মোট ২২টি কর সার্কেলে মোট টিআইএন ধারী করদাতার সংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার ৩২৭ জন। এর মধ্যে সার্কেল-১ (কোম্পানিজ) খুলনায় করদাতার সংখ্যা ১ হাজার ৬৮০ জন, সার্কেল-২ (কোম্পানিজ) এ ২ হাজার ১৭০ জন, সার্কেল-৩ খুলনায় ২৬ হাজার ১৬৭ জন, সার্কেল-৪ এ ২৪ হাজার ১০৭ জন, সার্কেল-৫ এ ১৫ হাজার ৫৪৮ জন, সার্কেল-৬ এ ১৪ হাজার ৯৫২ জন, সার্কেল-৭ (কোম্পানিজ) খুলনায় ৮ হাজার ২৬২ জন, সার্কেল-৮ যশোরে ২৬ হাজার ৯৯৫ জন, সার্কেল-৯ চুয়াডাঙ্গায় ১১ হাজার ৮১৭ জন, সার্কেল-১০ মাগুরায় ৮ হাজার ৬৮৫ জন,সার্কেল-১১ নওয়াপাড়ায় ৫ হাজার ৮৮৯ জন, সার্কেল-১২ ঝিকরগাছায় ৮ হাজার ৩৭ জন, সার্কেল-১৩ সাতক্ষীরায় ১৪ হাজার ৬৬৫ জন, সার্কেল-১৪ বাগেরহাটে ১০ হাজার ৭০২ জন, সার্কেল-১৫ নড়াইলে ৭ হাজার ৫২১ জন, সার্কেল-১৬ সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে ৪ হাজার ৭২৪ জন, সার্কেল-১৭ মংলায় ২ হাজার ১৫৫ জন,সার্কেল-১৮ কুষ্টিয়ায় ২০ হাজার ৪৭৪ জন, সার্কেল-১৯ ঝিনাইদহে ১০ হাজার ৪৫৬ জন, সার্কেল-২০ ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে ৬ হাজার ৫২১ জন, সার্কেল-২১ মেহেরপুরে ৪ হাজার ৯১৫ জন এবং সার্কেল-২২ ভেড়ামারায় ৪ হাজার ৪৮৫ জন।
তিনি জানান, এবার প্রথম তরুণ আয়কর দাতাদের (যাদের বয়স ৪০ বছরের নিচে) বিশেষভাবে পুরষ্কৃত করা হবে। এছাড়া এবার আয়করের আওতায় আনা হয়েছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। অবশ্য যাদের আয় ১৬ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে তাদের ইলেক্ট্রনিক ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (ইটিআইএন) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
এমআরএম/জেডএস