ঢাকা: শ্রীলংকার সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরিত হলে দেশটিতে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক, ওষুধ, সিমেন্ট, পেপারসহ বিভিন্ন পণ্য কম দামে রফতানি করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোয় হোটেল সিন্ডমোন লেকসাইডে ‘বাংলাদেশ-শ্রীলংকা জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন’ এর (জেএসি) ৫ম সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বমানের পণ্য আমদানি করা হলে শ্রীলংকার জন্যও তা লাভজনক হবে। কারণ, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম দামে বাংলাদেশ এ সকল পণ্য শ্রীলংকায় রফতানি করতে সক্ষম। বাংলাদেশও শ্রীলংকার সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। তাই দুই দেশের বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধির জন্যই শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষর হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুসারে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা দিচ্ছে। তাই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে শ্রীলংকা বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করতেই পারে। এতে করে দু’দেশের বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পাবে এবং উভয়েই এতে লাভবান হবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আগামী ২০২১ সালে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দেশের রফতানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন রফতানি বাজার সৃষ্টির জন্য সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রফতানি বৃদ্ধির জন্য আইটি, ওষুধ, ফার্নিচার, জাহাজ নির্মাণ ও কৃষিজাত পণ্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ’।
‘অনেক পণ্য রফতানিতে নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের রফতানি বাড়ছে। বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত হওয়ায় বেশিরভাগ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশকে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা দিচ্ছে। শ্রীলংকাও এ সুবিধা দিলে দুই দেশের বাণিজ্য বাড়বে এবং উভয় দেশ উপকৃত হবে’।
পরে শ্রীলংকার শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী রিশাদ বাথিউদ্দিন এবং অর্থমন্ত্রী রাভি কারুনানায়কের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন তোফায়েল আহমেদ। বৈঠকেও বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলংকার এফটিএ স্বাক্ষর এবং উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর আহবান জানান তিনি।
বৈঠক সূত্র জানায়, শ্রীলংকাও বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে এফটিএ স্বাক্ষর করবে দেশটি। এর ফলে শ্রীলংকার বাজারে বাংলাদেশের অনেক পণ্যের রফতানি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলংকার প্রায় ৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বাণিজ্য হচ্ছে। গত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ শ্রীলংকা থেকে আমদানি করেছে ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য এবং একই সময়ে রফতানি করেছে ৩০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।
বাংলাদেশের ঘাটতি বাণিজ্য ১৪ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বাণিজ্য খুবই সামান্য। শ্রীলংকার বাজারে তৈরি পোশাক, ওষুধ, সিমেন্ট, কাগজ, বৈদ্যুতিক সামগ্রী, পাটজাত পণ্যসহ বেশ কিছু বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শ্রীলংকার বাজারে শুল্কমুক্তসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সুবিধা প্রদান করা হলে রফতানি অনেক বাড়বে এবং বাণিজ্য বাংলাদেশের পক্ষে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৬
আরএম/এএসআর