ডিমের আড়তদাররা জানান, বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে সরকার ও বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) প্রচারণা করতে যে উদ্যোগ নিয়েছিলো তা পুরোই ভুল সিদ্ধান্ত। তাদের উদ্যোগ তো সফল হয়নি, উল্টো সাধারণ মানুষের মধ্যে ডিমের দাম নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ৩ টাকা দরে ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেয়। তবে সংগঠনটির অব্যবস্থাপনায় সে উদ্যোগ ভণ্ডুল হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিমের আড়তে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে তাদের ডিমের দাম বিভ্রাট ও অস্বস্তির বিষয়টি উঠে আসে।
তেজগাঁও ডিমের আড়তে খুচরা বিক্রেতাসহ ৭০টি পাইকারি দোকান রয়েছে। প্রতিদিন এখানে ৫০ লাখ ডিম পাইকারি দরে বিক্রি করা হয়। এখানকার বেশিরভাগ ডিম সংগ্রহ করা হয় ময়মনসিংহের ভালুকা, কাপাসিয়া, টাঙ্গাইল থেকে। মধ্য রাতে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এখান থেকে খুচরা বিক্রির জন্য ডিম সরবরাহ করা হয়।
এ বাজারে ২৫ বছর ধরে পাইকারি দামে ডিম বিক্রি করছেন আবুল হোসেন। তিনি জানান, বিশ্ব ডিম দিবসে খামারি ও সরকারের যে উদ্যোগ ছিলো তা ভালো ছিলো না। প্রচারণার জন্য মানুষের হয়রানির কোনো মানে হয় না। এতে এ সেক্টরের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। আমরা খামারিদের কাছ থেকে যে দামে ডিম কিনি, সেই ডিম পাইকারিতে ১৫ পয়সা বেশিতে বিক্রি করি। সেই ডিম তিন টাকায় বিক্রি করতে যাওয়া মানে মানুষের মধ্যে ডিমের দাম নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। প্রচারণার দরকার হলে ফ্রিতে ডিম খাওয়ানো উচিত।
তিনি বলেন, যেভাবে প্রচারণা চালানো হয়েছে, তাতে মানুষ হওয়ারই কথা। কোনো খামারির সাধ্য নেই তিন টাকায় ডিম খাওয়ানো, গতকালই তা প্রমাণ হয়েছে। উল্টো আমরা ডিমের দাম নিয়ে ঝামেলায় পড়েছি।
তেজগাঁওয়ে ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, খামারিদের কাছ থেকে ডিম এনে আমরা ১০ থেকে ১৫ পয়সা লাভ করি। বাজারে প্রতি পিস ডিম ৭/৮ টাকা দরে বিক্রি হয়। ৩ টাকায় ডিম বিক্রির নামে বিনা পয়সায় খামারিরা প্রচারণা চালালো।
তিনি বলেন, বিপিআইসিসি’র সদস্যরা রাজনৈতিক নেতা। তাদের বেশিরভাগই পোল্ট্রি ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত নন। শুক্রবার মানুষের ভোগান্তির পর তা প্রমাণিত হয়েছে। ৩ টাকায় ডিম বিক্রির ঘোষণার পর থেকে আমার কাছে ফোন আসে, আমরা খামারিদের কাছ থেকে তিন টাকা দামে ডিম কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। এতে আমরা অস্বস্তিতে আছি।
হারুন বলেন, দেশে ডিমের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সে তুলনায় আমাদের উৎপাদন কম। তবে আমরা রাজধানীর জন্য যে পরিমাণ ডিম প্রত্যাশা করি, খামারিদের কাছ থেকে তার পুরোটাই পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৭
এমসি/জেডএস