এনবিআরের তথ্য মতে, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আয়কর সম্পর্কে ভীতি দূর করার পাশাপাশি কর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ২০১০ সালে প্রথম আয়কর মেলা শুরু হয়। তখন থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত আট বছরে মেলায় ১১ লাখ ৮৫ হাজার ১৫৪ জন মানুষ আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আয়কর মেলার মাধ্যমে কর সংস্কৃতির বিকাশ ও কর সচেতনতা বাড়ছে। করদাতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন হচ্ছে। ফলে আয়কর মিলনমেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মেলার আকারও বাড়ছে।
এ বিষয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আয়কর বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভয়ভীতি ছিলো, যে কর দিতে এলেই এনবিআর কর্মকর্তারা ধরবেন। টাকার জন্য হয়রানি করবেন।
তিনি বলেন, এনবিআরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। করের বিষয়টি সঠিকভাবে তুলে ধরতে বলা হয়েছে। ফলে এখন হয়রানির প্রবণতা কমেছে। বিশেষ করে মেলায় আসা ব্যক্তিরা কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই কর দিতে পারছেন।
করদাতাবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ মেলার মাধ্যমে কর বিভাগ সম্পর্কে জনগণের ধারণা আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এ কারণে অনেকেই এখন স্বেচ্ছায় আয়কর দিতে আসছেন। এখানে এসে আয়কর বিষয়ক আইন ও বিধি সম্পর্কে করদাতারা আরো ভালোভাবে জানার সুযোগ পাচ্ছেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অন্যের ওপর তাদের যে নির্ভরশীলতা ছিলো, সেটা কমে আসছে এবং অনেকেই নিজের আয়কর রিটার্ন নিজেই পূরণ করতে পারছেন। কর সম্পর্কে অস্পষ্টতা এবং ভয়ভীতির বিষয়ও অনেকটা কেটে গেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভয়ভীতি আর থাকবে না।
২০১০ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত আয়কর মেলায় দু’টি স্টলে মোট ৬০ হাজার ৫১২ জন মানুষ সেবা নেয়। ৫ হাজার ৬৩৮ জন নতুন করে ই-টিআইএন খুলেন। কর দেন ৫২ হাজার ৫৪৪ জন। ফলে এনবিআরের কর আদায় হয় ১১৩ কোটি টাকা। সেখান থেকে মেলার স্টল ১৬৫টি বেড়ে ২০১৭ সালে দাঁড়িয়েছে ১৬৭টিতে। আর এ সময়ে সেবা নেওয়া নাগরিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৯ জনে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকা।
সবমিলিয়ে সেবা নেওয়ার হার বেড়েছে ১৯ গুণ। আর রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ গুণের বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
এমএফআই/আরবি/