ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অটোমেশনের ফলে চাকরি হারাবে ৫ জনের ২ জন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৯
অটোমেশনের ফলে চাকরি হারাবে ৫ জনের ২ জন দক্ষ জনশক্তি বিষয়ক সেমিনারে অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিশ্বজুড়ে শিল্পায়নে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। নিত্য নতুন এসব প্রযুক্তির কারণে পাল্টে যাচ্ছে কাজের ধরন ও গতি। দেশকে উন্নত করতে ও বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে শিল্পে প্রযুক্তির বিকল্প নেই। তবে শিল্প খাতে অটোমেশনের (স্বয়ংক্রিয়করণ) ফলে দেশের তৈরি পোশাক, কৃষি, ফার্নিচার, পর্যটন ও চামড়া খাতে প্রতি পাঁচজনে দুইজন শ্রমিক চাকরিচ্যুত হবেন বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

পাশাপাশি প্রযুক্তির আগমনের সঙ্গে সঙ্গে দেশ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতেও এগিয়ে যাচ্ছে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। তাদের মতে, শিল্পে অটোমেশনের ফলে যেমন চাকরি হারানোর ভয় রয়েছে, তেমনি প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পারলে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্রও তৈরি হবে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ব্যবসায়ী সংগঠন ডিসিসিআই আয়োজিত ‘আগামীর দক্ষ জনশক্তি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।

অনুষ্ঠানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে নিরসল কাজ করে যাচ্ছে সরকার। দেশের মঙ্গলে শিল্পে দিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সুযোগ। অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে ধারাবাহিকতা রাখতে পারলে আমরা আগামীতে উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখতেই পারি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান বলেন, বিশ্বে দক্ষ জনবল কোনো লক্ষ্য নয়, এটা একটা জার্নি। এই জার্নিতে জয় পেতে সরকারের পাশাপাশি উদ্যোক্তা ও অ্যাকাডেমিক জ্ঞানের প্রয়োজন। অটোমেশনের ফলে যেমন চাকরি হারানোর ভয়, তেমনি প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে সৃষ্টি হবে নতুন কর্মপরিবেশ। প্রধানমন্ত্রী তার ভিশন বাস্তবায়নে শিক্ষা-দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছেন।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, প্রযুক্তির জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন, যেটা আমাদের নেই। আমরা আশঙ্কা করছি শিল্পে অটোমেশনের ফলে আগামীতে দেশের তৈরি পোশাক, কৃষি, ফার্নিচার, পর্যটন ও চামড়া খাতে প্রতি পাঁচজনে দুইজন শ্রমিক চাকরিচ্যুত হবেন। অটোমেশনের ফলে শুধু তৈরি পোশাক খাতে ২০৪১ সালে ৬০ শতাংশ শ্রমিক চাকরিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ সমস্যা সমাধানে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকার, উদ্যোক্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ভূমিকা রাখতে হবে। অটোমেশনের ফলে নতুন নতুন পদ তৈরি হবে। যার মধ্যে থাকবে রোবট অপারেটর, এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানার, কন্ট্রোলার, কম্পিউটার কোয়ালিটি কন্ট্রোলার, অটোমেটেড মেশিন অপারেটর ইত্যাদি।

বিএমইটি’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্য টিকিয়ে রাখতে অবশ্যই অটোমেশনের প্রয়োজন। তবে সেটা ধাপে ধাপে হলে বেকার সংখ্যা কমবে। শিল্পে অটোমেশন কোথা থেকে শুরু করতে হবে, কোথায় এর মাধ্যমে স্বল্প বিনিয়োগে বেশি লাভ আসবে সেটা দেখতে হবে।

বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, শিল্পে দক্ষতা ও খরচের বিষয় দেখতে হবে, প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকতে হলে অটোমেশনের দিকে যাওয়ার বিকল্প নেই। তৈরি পোশাকের সোয়েটার খাতে সবচেয়ে বেশি অটোমেশন হচ্ছে। এর ফলে সেখানে কর্মরত ৫০ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। পেশাক খাতে ৮০ শতাংশ নারীর লিডারশিপের পাশাপাশি কর্মদক্ষতা না আনতে পারলে টিকে থাকা অসম্ভব।

দক্ষ জনশক্তি গড়তে ডিসিসিআই ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মধ্য একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ওসামা তাসেরের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি কামরান টি রহমান, বিএসসিআইসির চেয়ারম্যান মো. মোস্তাক হাসান, ডিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. ইমরান আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
ইএআর/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।