ঢাকা: আসছে ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে কোরবানির পশুর ব্যবসা নিয়ে উদ্বিগ্ন হাট ইজারাদাররা। হাটে আসতে রাজধানীবাসীর কম আগ্রহ, অনলাইনে কেনাবেচার সুযোগ, রাজধানীর বাইরে থেকে পশু বিক্রেতাদের হাটে কম উপস্থিতির আশংকা ভাবিয়ে তুলছে তাদের।
সম্প্রতি রাজধানীর দু’টি সিটি করপোরেশন পাঁচটি করে পশু কেনাবেচার অস্থায়ী হাটের চূড়ান্ত ইজারা দেয়। এছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন গাবতলীতে একটি স্থায়ী হাট রয়েছে।
ডিএনসিসির পাঁচটি হাটের মধ্যে উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে বৃন্দাবন থেকে বিজিএমইএ ভবন পর্যন্ত খালি জায়গার হাট ইজারা দেওয়া হয় নুর হোসেনকে। তিনি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ইজারা নেন। কাওলা শিয়াল ডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গায় ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় হাটের ইজারা পেয়েছেন রুবেল শওকত। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড আওতাধীন ডুমনি এলাকার হাট মাহমুদুল হাসান ইজারা পেয়েছেন ৪০ লাখ টাকায়। ৪০ নম্বর ওয়ার্ড আওতাধীন ভাটারার সাইদ নগর হাট ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে সিদ্দিকুর রহমানকে। আর উত্তরখানের হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে পারভেজ মিয়াকে। চার লাখ ২৫ হাজার টাকায় ইজারা পান পারভেজ।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) হাটগুলোর মধ্যে পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন হাটের ইজারা পেয়েছেন মঈন উদ্দিন চিশতী। তার ইজারা মূল্য ছিল ৭০ লাখ ৫০ হাজার। দুই কোটি ৫২ লাখ টাকায় গোপীবাগের হাটের ইজারা পেয়েছেন আমের খান। হাজারীবাগের হাটের ইজারা পেয়েছেন ইয়াফেজ আহমেদ। ইজারা মূল্য এক কোটি ৩৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫৫৫ টাকা। ৮৫ লাখ ৫০ হাজারে খিলগাঁও হাটের ইজারা দেওয়া হয়েছে এএমএম এন্টারপ্রাইজকে। আর সবশেষ আফতাব নগরের হাটের ইজারা দেওয়া হয়েছে মোহাম্মদ রায়হানকে। ইজারা মূল্য এক কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
প্রতিবার হাট থেকে ভালো অংকের মুনাফা থাকলেও এবার উলটো ক্ষতির আশংকা করছেন হাট ইজারাদাররা। ইজারাদারদের আশংকা, এবার ঢাকার বাইরে থেকে অনেক কম পশু বিক্রেতা হাটে আসবেন। এছাড়াও হাটে আসার চেয়ে রাজধানীর ক্রেতাদের অনলাইনে আগ্রহী হয়ে ওঠাও ভাবাচ্ছে তাদের।
উত্তরখান হাটে ইজারাদার পারভেজ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকার বাইরের বেশকিছু জেলা থেকে এবার কম বিক্রেতা আসবে বলে মনে হচ্ছে। কিছু এলাকা থেকে খবর পেয়েছি যে সেখানকার চেয়ারম্যানরা (ইউনিয়ন চেয়ারম্যান) পশু বিক্রেতা, খামারি, এদেরকে হুমকি দিচ্ছে যে, ঢাকায় পশু বিক্রি করতে গেলে ১৪ দিন গ্রামে ঢুকতে দেবে না। এটা আমাদের ব্যবসায় খুব খারাপ প্রভাব ফেলবে। আবার অনেকেই এখন অনলাইনে গরু কেনার কথা ভাবছেন। অনেক খামারিও অনলাইনে বিক্রি করছেন। তাই আমরা এবার ব্যবসা হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অন্যদিকে আফতাব নগর হাটের পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এবার অবশ্যই ‘সেলটা’ (পশুর বিক্রি) কমে যাবে। কিন্তু প্রতিবছর যে টাকায় ইজারা পেতাম এবারও তেমনি টাকায় বরাদ্দ পেতে হয়েছে। তবে আমাদের হাটগুলো বড় হাট তো। কোনোমতে চলে যাবে মনে হয়। তবুও হাট চালু হলে আসল পরিস্থিতি বোঝা যাবে।
আগামী কিছুদিন এবং প্রয়োজন হলে হাট চালুর পরে পরিস্থিতি বুঝতে চাচ্ছেন ইজারাদাররা। ব্যবসা মন্দার দিকে যাওয়ার আশংকা থাকলে সিটি করপোরেশনের কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করা হবে বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২০
এসএইএচএস/এএ