ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভোলায় পশুরহাট জমলেও জমেনি বেচাকেনা

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
ভোলায় পশুরহাট জমলেও জমেনি বেচাকেনা পশুরহাট

ভোলা: ভোলার ভেদুরিয়া এলাকার পশু বিক্রেতা জাকির হোসেন। তিনি তার দেশীয় প্রজাতির গরুর দাম হাঁকিয়েছেন ৭৫ হাজার টাকা।

কিন্তু দাম উঠেছে মাত্র ৬০ হাজার টাকা। দু’টি পশুরহাট ঘুরে শেষ পর্যন্ত গরু বিক্রি করতে পারেননি তিনি। একই অবস্থা অপর বিক্রেতা আব্দুল হাকিমের। তিনিও দুই হাটে গরু তুলেছেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম উঠেনি। তাই এখনও গরু বিক্রি করতে পারেননি।  

হাকিম বলেন, ৬০ হাজার টাকার গরুর দাম উঠেছে মাত্র ৪৫ হাজার টাকা। এমন চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত লোকসান দিয়েই গরু বিক্রি করতে হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে গরুর বাজার দাম নেমে গেছে।

শুধু জাকির কিংবা হাকিম নয়, বেশিরভাগ পশু বিক্রেতার এখন একই অবস্থা। পশুরহাট জমলেও এখনও জমে উঠেনি বেচাকেনা। গরু নিয়ে এবার বিপাকে পড়েছেন অনেকে বিক্রেতা। হাটে বিপুল পরিমাণ গরু উঠলেও বেচাকেনা খুবই কম। বিগত বছরের তুলনায় গরু ও ছাগলের দাম কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও করোনা সংকটে হাট জমতে দেরি হচ্ছে। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন অনেকে।

তবে বেশ কিছু হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম হলেও সেখানে স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। কেউ কেউ সামাজিক দূরত্ব মানলেও অনেকেই আবার মানছেন না।

এদিকে কোরবানির পশুরহাটকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সবধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক।

ভোলা শহরের ঘুইংগারহার, ইলিশার হাট, ধনিয়া ও ব্যাংকের হাটসহ বিভিন্ন হাট ঘুরে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে এমন দিনে জমে উঠে ভোলার পশুরহাটগুলো। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে হাটগুলোতে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। জেলার বড় বড় হাটে দেশি গরুর সমাগম আর ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় হলেও বেচাকেনা জমে উঠেনি। জমে না উঠায় অনেক বিক্রেতাই গরু বিক্রি নিয়ে বেশ চিন্তিত।

গরু বিক্রেতা অহিদ বলেন, লাভের আশায় গরু নিয়ে হাটে এসেছি, কিন্তু দাম কম। তাই কম করে হলেও ১০ হাজার টাকা লোকসান হবে। কারণ গরু মোটাতাজাকরণ করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে।

হাটে অপ্রীতিকর ঘটনা কিংবা চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের টহল জোরদার রয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, হাটগুলোতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  

ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, পশুরহাটে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে হাটে দু’জন ক্রেতার বেশি প্রবেশ করতে পারবে না। এছাড়া বয়স্ক ও শিশুদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। সারিবদ্ধ হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রবেশ করবে এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। হাটগুলোতে জ্বর মাপার যন্ত্র বসানো হয়েছে। এছাড়া গরু বেচাকেনার জন্য অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম করা হয়েছে।

এদিকে জেলায় গত বছর ৭৩টি হাট বসলেও এ বছর জেলায় ৯৩টি পয়েন্টে পশুরহাট বসানো হয়েছে। আগামী দু’একদিনের মধ্যে বাচাকেনা জমে উঠবে বলে মনে করছেন ক্রেতা বিক্রেতারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।