ঢাকা: কোভিড-১৯ ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মতো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে অর্থনীতি সচল রাখতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো ডিজিটাল গ্রিন টেকনোলজি ইনফরমেশন হাব ও ডিজিটাল মার্কেট প্লেস চালুর মতো উদ্যোগ নিতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার রাতে ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত ‘টুওয়ার্ডস আ গ্রিন অ্যান্ড রিজিলিয়েন্ট বিজনেস রিকভারি’ বিষয়ক সেশনের আলোচনায় বক্তারা এ অভিমত দেন।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সেশনটি সঞ্চালনা করেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম। এতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্যাসিফিক আইল্যান্ড প্রাইভেট সেক্টর অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান স্টিফেন লিয়ন, জ্যামাইকার ইকোনমিক গ্রোথ অ্যান্ড জব ক্রিয়েশন মিনিস্টার আওবিন হিল এবং কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ ও বিনিয়োগ কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামান্থা কোহেন সিভিও এই সেশনে আলোচনায় অংশ নেন।
সেশনের শুরুতে এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, সম্প্রতি সময়ে আমরা কোভিড-১৯ ছাড়াও বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি বেশ ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১ হাজার ২১০ কোটি ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের সহায়তায় আমাদের অর্থনীতি ৫ দশমিক ২৪ জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ কোভিড-১৯ এর ধাক্কা সামলে উঠেছে। ২০২১ ও ২০২২ সালে আমরা কোভিড-পূর্ব উন্নয়নের ধারায় ফিরে আসার পরিকল্পনা করছি।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পাশাপাশি এফবিসিসিআই ফ্রন্টলাইনার হিসেবে বেসরকারি খাতের পুনরুদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ দ্বারা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত খাতের মধ্যে প্রথম দিকেই রয়েছে পর্যটন ও বিমান খাত। এ ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ অর্থ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
ফজলে ফাহিম বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২১০০ সালের জন্য ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে কাজ করছে। জ্যামাইকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত কমনওয়েলথের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবাদে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। কমনওয়েলথের অধীন ডিজিটাল গ্রিন টেকনোলজি ইনফরমেশন হাব চালুর সুপারিশ করেন তিনি।
জ্যামাইকার ইকোনমিক গ্রোথ অ্যান্ড জব ক্রিয়েশন মিনিস্টার আওবিন হিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি ও কোভিড-১৯ মিলে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এ সময়ে ই-কমাসের্র চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জ্যামাইকানরা অনলাইন নির্ভর ব্যবসায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
প্যাসিফিক আইল্যান্ড প্রাইভেট সেক্টর অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান স্টিফেন লিয়ন বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশের জন্য পর্যটন বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত। কোভিড-১৯ এর কারণে পর্যটন ভেস্তে গেছে। এতে আমরা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছি।
কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ এবং বিনিয়োগ কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামান্থা কোহেন সিভিও বলেন, যুক্তরাজ্যে কিছু একটা ঘটলে, তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। এখন আমরা বুঝি যে, সবাই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। আমি মনে করি ডিজিটাল মার্কেট প্লেস তৈরি সবার জন্য উপকারী হবে। কারণ এটা টেকসই ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করে।
মূল ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুক্তরাজ্যের রফতানি বিষয়ক মন্ত্রী গ্রাহাম স্টুয়ার্ট, মালয়েশিয়ার যোগাযোগ ও মাল্টিমিডিয়া বিষয়ক মন্ত্রী দাতো সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ, ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সঙ্গীতা রেড্ডিসহ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২০
জিসিজি/এমজেএফ