ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বোরো ধান নিয়ে ব্যস্ত কৃষক: সরকারও কিনছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২১
বোরো ধান নিয়ে ব্যস্ত কৃষক: সরকারও কিনছে

বরিশাল: পরিশ্রম আর দীর্ঘ কয়েক মাসের অপেক্ষার পর চলছে পাকা ধান কাটার কার্যক্রম। এরইমধ্যে দক্ষিণিাঞ্চলের অনেক কৃষকের গোলাতেও বোরো ধান উঠতে শুরু করেছে।

গ্রামীণ জনপদের বেশিরভাগ জায়গাতেই কৃষক-কৃষাণীরা সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাকা ধান কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই, সিদ্ধ ও গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত খড়-কুটো শুকাতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। এরমধ্যে অনেকে সনাতন পদ্বতিতে গবাদিপশু দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ করলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হারভেস্টারসহ বিভিন্ন মেশিন দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন কৃষকরা।  

কৃষকরা বলছেন, গত বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছিলো, আর এবছরও ফলন ভালো হলেও বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে ধানে চিটা রয়েছে। আর বাগেরহাট, মাদারীপুর ও রাজবাড়ীসহ দূরবর্তী জেলা থেকে আসা ধান কাটা শ্রমিকরা বলছেন, দেশি প্রজাতির ধানের থেকে এবছর হাইব্রিড ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে বরিশাল জেলার মধ্যে আগৈলঝাড়া, গৌরনদী ও উজিরপুর উপজেলায় বেশি আবাদ হয়েছে। যেখানে ফলনও ভালো হয়েছে।  

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরোর ভালো ফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন গৌরনদী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মামুনুর রহমান। তিনি জানান, এবছর গৌরনদী উপজেলার ছয় হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।  

আর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, চলতি বোরো মৌসুমে বরিশাল জেলায় ৫২ হাজার ৮শত ৮২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ২৫ হাজার ১৪২ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ২৫ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে উফসি ও দুই হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো আবাদ হয়েছে।  

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলার  উপ-পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত জানান জানান, গত বছর কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্যে পাওয়ায় এবছর অনাবাদি বহু জমি বোরো চাষের আওতায় এসেছে। ফলে জেলায় বোরোর কাঙ্খিত লক্ষামাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি বোরো মৌসুমে বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলা থেকে ৪৩ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টন বোরো ধান এবং চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।  

এর মধ্যে ২৪ হাজার ৯৯ মেট্রিক টন ধান ও ১৯ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন চাল রয়েছে। যারমধ্যে কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ টাকা দরে প্রতি কেজি ধান এবং ৪০ টাকা দরে মিলারদের কাছ থেকে সিদ্ধ চাল কিনে সংগ্রহ করবে সরকার।  

বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,বরিশাল জেলা থেকে ৮ হাজার ১৪৪ মেট্রিক টন ধান ও ৫ হাজার ৪৪৫ মেট্রিক টন চাল ,ঝালকাঠিতে ১ হাজার ২২ মেট্রিক টন ধান ও ১ হাজার ৪০২ মেট্রিক টন চাল, পিরোজপুরে ৪ হাজার ৮৮৪ মেট্রিক টন ধান ও ৩ হাজার ৩৩২মেট্রিক টন চাল,ভোলায় ৭ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন ধান ও ৪ হাজার ৭১৪ মেট্রিক টন চাল,পটুয়াখালীতে ১ হাজার ৩৯২ মেট্রিক টন ধান ও ৪ হাজার ২৪ মেট্রিক টন চাল ও বরগুনায় ৭১৭ মেট্রিক টন ধান ও ৯৭৪ মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা হয়।  

বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৪০ টাকা দরে প্রতিকেজি চাল চলতি মাসের ৭ মে থেকে শুরু করে আগামী ১৬ আগস্ট এবং গত ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ২৭ টাকা দরে প্রতিকেজি বোরো-২১ নম্বর ধান আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত কিনে সংগ্রহ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২১
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।