ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কস্ট প্রাইসকে বিনিয়োগ সীমা গণনার সিদ্ধান্তে ঘুরে দাঁড়ালো পুঁজিবাজার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
কস্ট প্রাইসকে বিনিয়োগ সীমা গণনার সিদ্ধান্তে ঘুরে দাঁড়ালো পুঁজিবাজার

ঢাকা: বৈশ্বিক মন্দার কারণে দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দেয়। এর প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়ে।

বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার পর সূচক কিছুটা ইতিবাচক থাকলেও আবার পতন দেখা দেয় পুঁজিবাজারে।  ঠিক এমনি সময় বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ সীমা (এক্সপোজার লিমিট) গণনার পদ্ধতি ক্রয়মূল্যে করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন ঘোষণায় স্বস্তি ফিরেছে পুঁজিবাজারে। বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজার দরের পরিবর্তে ক্রয় মূল্যকে বিবেচনায় নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসা হচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সাড়া দেয়নি। তবে আব্দুর রউফ তালুকদারকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর থেকেই সেই সমস্যা সমাধানে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশা  জাগে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার জারি করলে দীর্ঘদিনের চাহিদা বিনিয়োগ সীমার সমস্যাটি সমাধান হওয়ায় পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সঙ্গে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ঘনিষ্ঠতায় নতুন গভর্নর শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ নেবেন বলে বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশীদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, কস্ট প্রাইসকে বিনিয়োগ সীমা গণনা এটা বিনিয়োগকারীসহ সকলের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এটি সমাধানের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরবে একই সঙ্গে আগামীতে বাজার ইতিবাচক হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর বাজার মূলধন চার হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা ফিরেছে। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল পাঁচ লাখ তিন হাজার ২৬৬ কোটি টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় পাঁচ লাখ আট হাজার ১০৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন চার হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা বেড়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তিন কার্যদিবসে (ডিএসই) দুই হাজার ৮৩৮ কোটি ৭০ লাখ ৮৪ হাজার ১৩৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ৫৮৪ কোটি পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ৯৯২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেনে ৭৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৪ টাকা কমেছে।

উল্লেখ, জাতীয় শোক দিবস ও জন্মাষ্টমী কারণে ১৫ ও ১৮ আগস্ট পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯২.৬৭ পয়েন্ট বা ১.৫১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৪১.৪৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২০.৬৭ পয়েন্ট বা ১.৫৪ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৫.৬৬ পয়েন্ট বা ১.১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬৬.৩৮ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২২০.০৫ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৭টির, কমেছে ৪২টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৯টির এবং সাতটি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের কোনো লেনদেন হয়নি।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে তিন কার্যদিবসে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ৬৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮২ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৭৪ কোটি ২২ লাখ ৮৭ হাজার ৬৯৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫২ হাজার ১১৭ টাকা কমেছে।

সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪২.২৪ পয়েন্ট বা ১.৩৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৬৯.৯২ পয়েন্টে।  

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩২৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৮৪টির দর বেড়েছে, ৫৪টির কমেছে এবং ৮৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
এসএমএকে/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।