‘পাখ-পাখালি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই যত্ন' প্রতিপাদ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর পর অনুষ্ঠিত হলো পাখি মেলা।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে ‘পাখিমেলা-২০২৩’ এর উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখির বসবাস উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে। এই পরিবেশ ধরে রাখার দায়িত্ব সবার। এ জন্য কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। পাখির অভয়ারণ্য নিশ্চিত করার স্বার্থে এসব বিধি-নিষেধ মানতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত অনুষ্ঠান ও আতশবাজিতে পাখি ভয় পেয়ে অন্যত্র চলে যেতে পারে। পাখির প্রতি সবাইকে দায়িত্বশীল ও যত্নবান হতে হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, সম্প্রতি পাখির সংখ্যা কমে গেছে। গবেষকরা এর জন্য শব্দ দূষণকে অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন। পাখিরা নীরব পরিবেশ পছন্দ করে। কিন্তু করোনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন বেড়ে গেছে। এসব অনুষ্ঠানে অনেকে শব্দ দূষণ করেছেন। আমাদের পাখির নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আরও সচেতন হতে হবে।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক নুহু আলম, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ, বিশিষ্ট পাখিবিশারদ ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রমুখ।
দিনব্যাপী এই পাখিমেলায় নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলার দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, পাখির আলোকচিত্র ও পত্র পত্রিকা প্রদর্শনী, পাখি বিষয়ক আলোচনা আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি চেনা প্রতিযোগিতা (অডিও ও ভিডিও এর মাধ্যমে) ও পাখি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা।
এছাড়া বিগত এক বছরে গণমাধ্যমে পাখি ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার তিন জন সংবাদকর্মীকে ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ এবং বিগত এক বছরে বাংলাদেশের পাখির ওপর সায়েন্টিফিক জার্নাল, প্রকাশিত প্রবন্ধ পর্যালোচনা করে একজনকে ‘সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, 'বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব' ২০০০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পাখি মেলার আয়োজন করে। পরে পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে ২০০১ সাল থেকে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিকভাবে পাখি মেলার আয়োজন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক