শাবিপ্রবি, (সিলেট): পবিত্র ঈদুল ফিতরে আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী হল কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হলের ছাত্রীরা।
অন্যদিকে দুর্গাপূজার বন্ধে হল খোলা রাখলেও ঈদে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে ‘বৈষম্যে' বলে দাবি করেছেন ছাত্রীরা। এতে হল খোলা রাখতে লিখিত আবেদন করলেও তা প্রত্যাখান করেছেন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জোবেদা কনক খান। তবে হল বন্ধ রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো নির্দেশনা দেয়নি বলে দাবি ছাত্রীদের।
তাদের অভিযোগ, পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে হল বন্ধ রাখার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ধরনের নোটিশ না দিলেও হল প্রশাসন ‘জোরপূর্বক’ বন্ধ রাখতেছে। ছাত্রীদের রুমে রুমে গিয়ে হল ত্যাগ করার জন্য তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ছাত্রদের হলগুলো খোলা রাখা হচ্ছে। এতে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে মনে করছেন অনেক ছাত্রী।
এদিকে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) এর মধ্যে সকল ছাত্রীকে হল ত্যাগ করতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিরাজুন্নেসা হলের আবাসিক ছাত্রীরা। এরপর প্রায় ১০ দিন বন্ধ শেষে আগামী ২৮ অক্টোবর হল খুলে দেওয়া হবে বলে জানান তারা।
হল খোলা রাখার জন্য প্রভোস্ট বরাবর ১৯ ছাত্রীর সই সম্বলিত একটি লিখিত আবেদনপত্র জমা দিলেও তা হলের প্রভোস্ট প্রত্যাখান করেছেন বলে জানিয়েছেন ছাত্রীরা। তবে প্রথম ছাত্রী হলে হল ত্যাগের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা না থাকলেও ছাত্রীরা ঈদের আগে হল ত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন ওই হলের সহকারী প্রভোস্ট মাছুমা আক্তার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ছাত্রী বলেন, আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় টিউশন করাতে হচ্ছে, ছুটিতে বাড়িতে গেলে টিউশন থেকে বেতন নাও দিতে পারে। কিন্তু টিউশন করে তো পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাচ্ছি। হলের প্রভোস্টকে বলার পরেও তিনি হলে থাকতে দিচ্ছেন না। বন্ধুদের মেসে থাকার জন্য বলেছেন তিনি (প্রভোস্ট)।
তারা বলেন, অনেকের বাড়ি দূরে হওয়ায় ছুটিতে বাড়িতে যেতে পারে না। এছাড়া ঈদের পর সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হবে। তাই অনেকে হলে থেকে পড়াশোনা করতে চায়। হলে থাকার ব্যাপারে আবেদন করলেও তিনি (প্রভোস্ট) তা মঞ্জুর করেননি।
তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার জন্য আইন সমান, অধিকারও সমান। কিন্তু ছাত্রীদের বেলায় তা সবসময় উল্টো হয়ে আসতেছে, মুখে সম অধিকার এবং নারীদের অধিকারের কথা বলা হলেও বাস্তবিক অর্থে তার উল্টোটাই হচ্ছে। নানান নিয়ম তৈরি করে তা ছাত্রীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজ মেয়ে বলেই হল ছেড়ে দিয়ে মেসে গিয়ে উঠতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জোবেদা কনক খানকে একাধিকবার কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে কয়েকজন সহকারী প্রভোস্টকে কল দিলেও তারা কলরিসিভ করেননি।
প্রথম ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জায়েদা শারমিনের মোবাইল ফোনে একধিকবার কল দিলে তিনিও রিসিভ করেননি।
সহকারী প্রভোস্ট মাছুমা আক্তার বলেন, আমার জানামতে ছাত্রীরা কেউ হলে থাকবেন না। তাই হল বন্ধ থাকবে। তবে ঈদের দুই দিন পর আবার হল খুলে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৩
এএটি