ঢাকা: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এখন ভালো একটি শিক্ষাক্রম হয়েছে। আমরা এখন শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের উন্নয়নে কাজ করছি।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘লার্নিং লস’ নিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহযোগিতায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাজেটে টাকা বাড়বে, আরও অনেক বাড়বে। এখন ভালো একটি শিক্ষাক্রম হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। আমরা এখন যেসব কাজ করছি সেগুলো শেষ হলে বাজেট বাড়বে। আমি তো বলছি— শিক্ষায় একটি মেগা প্রজেক্ট হবে। শিক্ষক রিক্রুটম্যান্ট প্রক্রিয়াকে আরও অনেক ভালো করার চেষ্টা করছি। শিক্ষকদের সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা যত ভালো করতে পারবো। আমরা তত এগিয়ে তে পারবো।
দীপু মনি বলেন, বৈশ্বিক অতিমারি করোনার কারণে সারা বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদেরও হয়েছে। শিক্ষায় এর প্রভাব পড়েছে। তবে লার্নিং লস বা গ্যাপ পূরণে সময় লাগবে। একটি বা দুটি শিক্ষাবর্ষে তা পূরণ হবে তেমন নয়। করোনাকালে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে আমরা ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থীকে লেখাপড়ায় যুক্ত করতে পেরেছি। অতিমারির কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেরা চেষ্টা করে শেখার যোগ্যতা অর্জন করেছে। প্রযুক্তি ব্যবহার শিখেছে। অনেক সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ মিলিয়ে বাজেট শতকরা তিন ভাগের কাছাকাছি। এটাকে বাড়াতে হবে। টাকার অংকে হলে ২০০৭ সালে বিএনপি-জামায়াত আমলের শেষ বছরে আমাদের সারা দেশের বাজেট ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। এখন আমাদের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বাজেট প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। সেই অর্থে বিনিয়োগ অনেক বেশি। বিনিয়োগ টাকার অংকে কত হচ্ছে তার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে শুধুমাত্র শিক্ষা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ সেটাই শুধু শিক্ষায় নয়; খাদ্য, পুষ্টি, বিদ্যুৎ, আইসিটি ও যোগাযোগে যে বিনিয়োগ হচ্ছে। এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানান রকম প্রভাব শিক্ষার ওপর আছে। তাছাড়া শুধু বাজেট বরাদ্দ নয়, টাকা নয়, আমার অনেক টাকা আছে কিন্তু কারিকুলাম ভালো না, আউটকাম কি ভালো হবে? অনেক টাকা আছে শিক্ষক ভালো না, তাহলে আউটকাম পাবো না। টাকা আছে টেকনোলজি ব্যবহার করতে পারছি না। আবার টাকাও আছে সব কিছু আছে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছি না তাহলেও হবে না।
তিনি বলেন, আমরা এখন চাইছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় অনেক বেশি ক্লাব গঠন করতে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্লাব বেইজ হবে। দাবা ক্লাব হবে না কেন, বিজ্ঞান ক্লাব হবে না কেন, ডিবিটিং ক্লাব হবে না কেন? অন্যান্য আরও ক্লাব হবে না কেন? খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হবে। এখন রোবোটিক ক্লাব হচ্ছে, নানান কিছু হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালো করছে, তাদের আর একটু এগিয়ে দিতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সার্বিক তত্বাবধানে এই গবেষণা কাজ সম্পন্ন করা হয়। গবেষণা কাজে ১৮ হাজার ৮৩৮ জন প্রাথমিক শিক্ষার্থীর ওপর অভীক্ষা পরিচালিত হয়। গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর মতামত দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমদ। স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (প্রাথমিক) ড. এ কে এম রেজাউল হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২৩
এমআইএইচ/এসআইএ