ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

জবিতে স্থায়ী পিডি ছাড়া টেন্ডার নয়, নিয়োগে তোড়জোড়

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
জবিতে স্থায়ী পিডি ছাড়া টেন্ডার নয়, নিয়োগে তোড়জোড়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): পূর্ণকালীন কোনো প্রকল্প পরিচালক (পিডি) না থাকলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসের (কেরানীগঞ্জ) কোনো টেন্ডার অনুমোদন হবে না জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন একজন পূর্ণকালীন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।

এই পরিস্থিতিতে পিডি নিয়োগে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকল্প পরিচালক পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তালিকায় রয়েছেন- পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান, পরিকল্পনা দপ্তরের উপ-পরিচালক নায়লা ইয়াসমিন ও উপ-পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ।  

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৩ জুন রেজিস্ট্রার পদে অবসরে যাবেন প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পের শুরুর দিকে এবং বর্তমানে দায়িত্ব পালন করার জন্য পিডি হিসেবে তার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। রেজিস্ট্রার পদে অবসরে গেলে মন্ত্রণালয়ের সাড়া পেলে তাকে চুক্তিভিত্তিক ভাবে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দেওয়া হতে পারে।  

অন্যদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োজিত রয়েছেন উপ-পরিচালক নায়লা ইয়াসমিন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তর থেকে তিনি নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্প দেখভাল করেন। তাই অভিজ্ঞ হওয়ার কারণে পিডি হিসেবে তার নাম প্রস্তাব করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  

আর উপ-পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের প্রকল্প দেখভাল করেন। তবে তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সৈয়দ আলী আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।  

তদন্ত কমিটি গঠনের অভিযোগে বলা হয়, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, কেমিক্যালস ও গ্লাসওয়ার মালামালের বিষয়ে কী কারণে চার লাখ ৫৬ হাজার ৯০০ টাকার স্থলে আট লাখ ২৮ হাজার ৮৫০ টাকা নথিতে দেওয়া হলো, তার সঠিক তথ্য উদঘাটন ও পরবর্তী করণীয় সুপারিশের জন্য চার সিনিয়র অধ্যাপক ও এক সিনিয়র কর্মকর্তার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।

কমিটির একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হয়। সত্যতা মেলায় সৈয়দ আলী আহমেদ ও আরেক কর্মকর্তা হিমাদ্রী শেখর মন্ডলকে ওই দপ্তর থেকে বদলির সুপারিশ করা হয়। হিমাদ্রী শেখরকে বদলি করা হলেও সৈয়দ আলীকে অদৃশ্য কারণে বদলি করা হয়নি। এর আগে সৈয়দ আলীর বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের আসবাবপত্র কেনায় অনিয়মের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

গত বছরের নভেম্বরে প্রকল্প পরিচালক পদে স্থায়ী নিয়োগের জন্য চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এতে প্রায় ১০-১২ জন আবেদন করেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে চারজন সিনিয়র কর্মকর্তা আবেদন করেন।  

উপ-পরিচালক নায়লা ইয়াসমিন ও সৈয়দ আলী আহমেদসহ অর্থ ও হিসাব দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সৈয়দ আহম্মদ ও প্রকৌশল দপ্তরের উপ- প্রধান সুকুমার চন্দ্র সাহা আবেদন করেছেন। তবে সৈয়দ আহম্মদ ও সুকুমার চন্দ্রের নাম বাদ দিয়ে পিডির জন্য তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের মতো বড় প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে দক্ষ ও সৎ ব্যক্তিকে চান জানিয়ে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এত বড় প্রকল্প, হাজারো শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর স্বপ্ন যেখানে জড়িত, সেখানে দক্ষ, সৎ ও খ্যাতিমান কাউকে পিডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হোক। চুক্তিভিত্তিক বা খণ্ডকালীন নয়, স্থায়ীভাবে পিডি নিয়োগ দেওয়া হোক।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০১ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।