জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যরাতে জঙ্গলে ডেকে র্যাগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দ্বিতীয় বর্ষের ১১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রত্যাহার করতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের ‘চাপ’ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী।
গত রোববার (২৮ মে) দিবাগত রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিডনি ফিল্ড সংলগ্ন এলাকায় র্যাগ দেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে র্যাগিংয়ের শিকার একই বিভাগের ৫১ ব্যাচের ১২ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যেখানে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
তবে রাতে শাস্তির দাবি জানালেও রাত পার হতেই ‘কোনো অভিযোগ নেই’ বলে গণমাধ্যমকে জানান একাধিক শিক্ষার্থী।
র্যাগিংয়ের শিকার প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সাদিকুর রহমান বলেন, আমাদের দিয়ে জোরপূর্বক অভিযোগপত্র লেখানো হয়েছে। আমাদের ভাইয়েরা আমাদের র্যাগ দেয়নি। আমার অন্য বন্ধুদের কথা জানি না। কিন্তু আমার কোন অভিযোগ নেই ভাইদের বিরুদ্ধে।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আজকে আমাদেরকে জোর করে ডিপার্টমেন্টের স্যারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। যাতে আমরা গিয়ে স্যারকে বলি আমাদের সাথে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া বলা হচ্ছে, আমরা যেনো আরেকটা দরখাস্ত লিখে র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিই। সবকিছু আমাদেরকে জোর করে করানো হচ্ছে। এটাও বলছে এবার যদি সিনিয়ররা কোনো শাস্তি পায় তবে আরো ‘ভয়ংকর’ হয়ে উঠবে। আমরা সবকিছুই মিলিয়ে শংকিত।
অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মিঠুন রায় বলেন, আমি র্যাগিংয়ের ঘটনায় ছিলাম না। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। ’
তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত করেন মিঠুন রায় সেদিনের ঘটনায় সামনের সারিতে ছিলেন। তার ডাকেই শিক্ষার্থীরা জঙ্গলে আসতে বাধ্য হন বলেও জানান তারা।
এছাড়া র্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রত্যাহারে ‘চাপ’ প্রয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মিঠুন রায় ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মনিরুল হাসান খান বলেন, আমি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। জানার চেষ্টা করছিলাম তারা ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের চাপ দিচ্ছে কিনা। তবে তারা জানিয়েছিলো এমনটা হচ্ছে না। তারা যদি অপরাধের সাথে জড়িত থাকে তবে অবশ্যই শাস্তি পাবে। এসব করে কোনোভাবেই ছাড় পাওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বাংলানিউজকে বলেন, র্যাগিংয়ের ঘটনায় আমরা ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের শোকজ করেছি। এ বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতিকেও অবহিত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের কোন ধরনের ‘চাপ’ প্রয়োগ করা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মে ৩০,২০২৩
নিউজ ডেস্ব