ঢাকা: প্রযুক্তি শিক্ষায় বৈশ্বিক কোম্পানি কোডার্সট্রাস্ট ও জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক ইউনিভার্সিটি ফর পিস বৈশ্বিক উন্নয়ন ও শান্তির জন্য দক্ষতা সৃষ্টির লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অংশীদারিত্ব স্মারকে স্বাক্ষর করেন ইউপিসের রেক্টর অধ্যাপক ফ্র্যান্সিককো রোজাস অ্যারাভেনা ও কোডার্সট্রাস্টের চেয়ারম্যান আজিজ আহমদ। এ অংশীদারিত্বের আওতায় ইউনিভার্সিটি ফর পিস- ইউপিসের শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল যুগে প্রয়োজনীয় অগ্রসরভিত্তিক প্রযুক্তি দক্ষতার (নেক্সট জেনারেশন স্কিলস) প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট। এছাড়া থাকবে একাডেমিক সহযোগিতার সম্পর্ক ও শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি।
ইউনিভার্সিটি ফর পিসের ভাইস রেক্টর ড. হুয়ান কার্লোস সেইনজ বোরগো, ইউপিসের বিশেষ উপদেষ্টা মেলিসা মেনিস ও ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে কোডার্সট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামসুল হকসহ অন্য কর্মকর্তারা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এ সময় কোডার্সট্রাস্ট ও ইউপিসকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. দীপু মনি বলেন, এ অংশীদারিত্ব উভয় প্রতিষ্ঠানের মিশন ও ভিশনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে। বাংলাদেশের তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারী ও যুব শ্রেণিকে দক্ষতাভিত্তিক কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে অব্যাহত অবদান রাখার জন্য কোডার্সট্রাস্টের প্রশংসা করেন শিক্ষামন্ত্রী। চার দশক আগে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে যখন ইউনিভার্সিটি ফর পিস গঠিত হয় তখন তাতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনও ছিল স্বাক্ষরকারী দেশ- বক্তব্যে স্মরণ করেন দীপু মনি।
ইউপিসের রেক্টর অধ্যাপক ফ্রান্সিসকো রোজাস আরাভেনা বলেন, যে কোনো উদ্ভাবনই হতে হবে শান্তির জন্য। নেক্সট জেনারেশন স্কিলস কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো উদ্ভাবনগুলো যাতে মানবতার শান্তি ও সমৃদ্ধিতে ব্যবহার করা সম্ভব হয় তার ওপর জোর দেন তিনি। প্রযুক্তি দক্ষতার প্রশিক্ষণে সুবিধাবঞ্চিত, অবহেলিত ও কর্মহীন নারী ও যুব শ্রেণির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ায় কোডার্সট্রাস্টের প্রশংসা করেন অধ্যাপক আরাভেনা।
একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করার কথা উল্লেখ করে ইউপিসের রেক্টর বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটি স্থায়ী।
কোডার্সট্রাস্টের চেয়ারম্যান আজিজ আহমদ বলেন, বৈশ্বিক শান্তি, শিক্ষা, কর্মসুযোগ ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য এ ধরনের পারস্পরিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আজকের বিশ্বে প্রযুক্তির অগ্রসরতা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। এ অবস্থায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ডিজিটাল দক্ষতা জরুরি। চলতি দশকে ১ বিলিয়ন যুব শ্রেণি কর্মজগতে ঢুকবে যারা কর্মহীনতা কিংবা যোগ্যতার চেয়ে কমমূল্যের কাজের ঝুঁকিতে থাকবে এমন পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের ৪৫ শতাংশ কর্মশক্তিরই টিকে থাকার জন্য প্রতি ৩ থেকে ৪ বছরে নতুন দক্ষতা নিতে হবে।
যুব শ্রেণির জন্য অগ্রসর প্রযুক্তি দক্ষতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে আজিজ আহমদ বলেন, এর মধ্য দিয়েই বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখা সম্ভব। দারিদ্র, অসমতা, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো যে বিষয়গুলো মানব নিরাপত্তা ও সুন্দর জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে সেগুলোকেও দূর করতে পারে প্রযুক্তি দক্ষতা- যোগ করেন তিনি।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরপরই একটি গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি ফর পিস। মানবাধিকার ও ডিজিটাল যুগে শান্তি বিনির্মাণ শীর্ষক ওই আলোচনায় প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশ নেন আজিজ আহমদ। এতে প্যানেলিস্ট হিসেবে আরও ছিলেন- ইউপিসের ভাইস রেক্টর ড. হুয়ান কার্লোস সেইনস-বোরগো, ইউপিসের স্পেশাল অ্যাডভাইজর মেলিসা ম্যানিস, ডক্টরাল কো-অর্ডিনেটর ড. মারিয়াতেরেসা গারিডো, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার অব ডেটা জার্নালিজমের পরিচালক জিয়ানিনা সেগনিনি, এআই ফর পিস এর ফাউন্ডিং ডিরেক্টর ব্র্যাঙ্কা প্যানিক, অ্যাবোগাডো অ্যাগুইলার ক্যাস্টিলো লাভ-এর ফ্যাবিন সোলিস, ব্রাজিল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের ডেটা প্রাইভেসি প্রকল্পের প্রধান ম্যারিনা মিরা, ইউনাইটেড নেশনস রিলেশন্সের গ্লোবাল ডিরেক্টর ও ভিপি মারসেলা চ্যাকন, রোকো প্ল্যান্টসের সিইও ড্যান ও'ব্রায়েন, কোস্টারিকার ফরেন ট্রেড মন্ত্রণালয়ের পরিচালক নাতালিয়া পোরাস প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২৩
এইচএমএস/আরবি