জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রিমোট সেনসিং ইনস্টিটিউটের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর এলাকায় এ মারধরের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী খান মোহাম্মাদ ইবতেহাল ও ফারাবী আকাশ। ইবতেহাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ফারাবী আকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী অপূর্ব সরকার, ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিস বিভাগের ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাসিম খান ও কাজী হাসান আল বান্না।
এর মধ্যে নাসিম খান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক ছাত্র। এছাড়া অপূর্ব সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক জব্বার হলের এবং কাজী হাসান আল বান্না মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী খান মোহাম্মাদ ইবতেহাল উল্লেখ করেন,‘আমি গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২১ নম্বর হলে উঠি। এর আগে আমি ইসলামনগরে একটি মেসে থাকতাম। মেস ছেড়ে দেওয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। এ সময় অভিযুক্ত তিনজনসহ আরো কয়েকজন আমার ও ফারাবী আকাশের ওপরে অতর্কিত হামলা করেন। হামলা করার সময় তারা আমাদের বহিরাগত বলে চিৎকার করেন এবং ক্রমাগত আঘাত করতে থাকেন। ’
ভুক্তভোগী খান মোহাম্মাদ ইবতেহাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। কিন্তু আমাকে বহিরাগত তকমা দিয়ে জনসম্মুখে এভাবে মারা হলো। আমি এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। ’
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাসিম খান বলেন, ‘মারধর করেছি আমি প্রক্টরের কাছে বক্তব্য দেব। আপনার কাছে কোনো বক্তব্য দেব না। ’
আরেক অভিযুক্ত ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী অপূর্ব সরকার বলেন, ‘ও একজন বহিরাগত হয়ে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার কীভাবে করে(!) এজন্য সবাই তাকে মারধর করেছে। ’
তবে নিয়মিত শিক্ষার্থী হওয়ার পরেও তাকে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে মারধর কেন করা হলো এ প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এর প্রভাষক মো. মুনীর মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীকে এভাবে বহিরাগত বলে মারধর করা মারাত্মক অন্যায়। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত হতে পারে না। ’
অভিযোগপত্রের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল বলেন, 'প্রক্টর অফিসে একটি অভিযোগপত্র এসেছে। তবে আমরা এখনো দেখিনি। বুধবার প্রক্টর স্যারসহ অভিযোগপত্রটি দেখবো। অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ১৪ জুন, ২০২৩
এসআইএস