ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভক্ত জাবি শিক্ষকরা

ওয়ালিউল্লাহ, জাবি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০১২
উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভক্ত জাবি শিক্ষকরা

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষকরা ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

একগ্রুপের শিক্ষকরা উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের আগে ডিন ও সিন্ডিকেট নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

অপর গ্রুপের শিক্ষকরা উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সহযোগিতার করার কথা জানিয়েছেন।

এদিকে, উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন বিধিসম্মত হবে না মর্মে প্রতিবাদ দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, জাবি সংসদ।

গত রোববার ‘তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল’ মনোনয়নের জন্য ২০ জুলাই শুক্রবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান করা হয়।

‘তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল’ মনোনয়নের জন্য নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর সোমবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে শিক্ষকরা উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের আগে ডিন ও সিন্ডিকেট নির্বাচনের দাবি জানান।

অপরদিকে, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ সংগঠনের শিক্ষকরা ‘উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন’ সব ধরনের সহযোগিতার কথা জানান।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক শরিফ উদ্দিনসহ শিক্ষকরা উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে তাদের প্রত্যাশিত কর্মসূচি পেশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ এর ১৯(১)(ই) উপধারা মোতাবেক চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত সিনেট সদস্য ৫ জন মেয়াদোত্তীর্ণ।

১৯৭৩ এর ১৯ (১)(জি) উপধারা মোতাবেক শিক্ষা পর্ষদ কর্তৃক মনোনীত ৫ জন সিনেট সদস্য মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯৭৩ এর ১৯(১)(এফ) উপধারা মোতাবেক সিন্ডিকেট কর্তৃক মনোনীত ৫ জন্য সিনেট সদস্য মেয়াদোত্তীর্ণ।

এছাড়া জাকসু থেকে মনোনীত সিনেট সদস্যরা ২০ বছর ও রেজিস্ট্রার গ্র্যাজুয়েট মনোনীত সিনেট সদস্যরা ১৪ বছর আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছেন।

এদিকে ডিন ও সিন্ডিকেট নির্বাচন করতে হবে। সাবেক উপাচার্যের সময় প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কার করে লেভেল-প্লেইং ফিল্ড তৈরি করার পর উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন হলে শিক্ষক সমিতির সমর্থন থাকবে বলে জানিয়েছেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক শরিফ উদ্দিন।

অপরদিকে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অসিত বরণ পাল বলেছেন, ‘আমারও চাই বৈধ প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করুক। যেহেতু, উপাচার্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য তফশিল ঘোষণা করেছেন; সেহেতু দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।

এদিকে ‘উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন বিধি সম্মত হবে না’ মর্মে প্রতিবাদ দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, জাবি সংসদ।

জাবি সংসদের দপ্তর সম্পাদক ফেরদৌস খান মেরাজ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্প্রতি উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্তকে ‘ছাত্র সমাজের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন’ বলে অবহিত করেছেন জাবি সংসদের সভাপতি সৌমিত চন্দ জয়দ্বীপ ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিন্নাহ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যথোপযুক্ত প্রতিনিধিদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের বিধি ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ থাকলেও সে বিধি লঙ্ঘন করেই এই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

২০ বছর যাবত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের অভাবে সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নেই। ফলে, এ সিনেট যে উপাচার্যকে মনোনীত করবে, তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করবেন না।

উল্লেখ্য, আগামী ২০ জুলাই শুক্রবার সকাল ১০টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান করা হয়েছে।

এ সভায় ‘তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল’ মনোনয়নের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ২০০৪ সালে ‘তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল’ মনোনয়নের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘন্টা, জুলাই ০২, ২০১২
সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।