রাবি: হরতাল-অবরোধের কারণে গ্রাজুয়েটদের ক্যাম্পাসে পৌঁছা নিয়ে উৎকণ্ঠা আর সফলভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে কিনা সে শঙ্কা উপেক্ষা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবম সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
ভোগান্তি পেরিয়ে বহুল কাঙ্ক্ষিত সমাবর্তনে যোগ দিতে আসা গ্রাজুয়েটদের পদচারণায় ক্যাম্পাস এখন মুখর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্টেডিয়ামে আয়োজিত সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দিল্লীর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. তালাত আহমদ।
এতে অংশগ্রহণের জন্য ২০০০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রায় চার হাজার ৭৭১ জন গ্রাজুয়েট নিবন্ধন করেছেন।
হরতাল ও অবরোধের কারণে নিবন্ধিত গ্রাজুয়েটদের ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পথে পথে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ২০ দলীয় জোটের রাজশাহী বিভাগে রোববার (১৮ জানুয়ারি) থেকে ৩৬ ঘণ্টা হরতাল চলছে। এ কারণে অনুষ্ঠান শেষে সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ কর্মস্থল বা বাড়িতে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তবে শত দুর্ভোগ পেরিয়ে কাঙ্ক্ষিত সমাবর্তনে অংশ নিতে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পেরে অনেকেই উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন। পুরোনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে পথের দুর্ভোগের গল্পও করছেন কোনো কোনো গ্র্যাজুয়েট।
ঢাকা থেকে সমাবর্তনে যোগ দিতে আসা আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী কুদরাত-ই-খুদা বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সমাবর্তনে যোগ দেওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলাম। তারপরও ভোগান্তি পেরিয়ে ক্যাম্পাসের এই উৎসবে আসতে পারার অনুভূতি অন্যরকম। এ যেন ক্যাম্পাস জীবনকে আরেকবার নতুন করে ফিরে পাওয়া।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন বলেন, ট্রেনের টিকেট কাটা ছিল। কিন্তু ট্রেন ২৭ ঘণ্টা লেট হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ও দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে লোকাল বাসে করে রাজশাহী পৌঁছেছি। অবরোধের কারণে আমাদের অনেক সহপাঠী সমাবর্তনে যোগ দিতে পারছেন না। এজন্য আনন্দ কিছুটা কম। একই রকম কথা জানালেন নিবন্ধিত গ্রাজুয়েট মাহমুদ সোহেল, শহীদুল ইসলাম ও আকন্দ মো. জাহিদ।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। নিজ নিজ বিভাগ থেকে সমাবর্তনের পোশাক গ্রহণ করছেন গ্রাজুয়েটরা। এরপর সেগুলো পড়ে ক্যাম্পাস ঘুরে ফ্রেমবন্দি করে রাখছেন ক্যাম্পাস জীবনের শেষ আনুষ্ঠানিকতার স্মৃতিটুকু। কেউ বা জমিয়ে আড্ডায় ব্যস্ত পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে। সমাবর্তনে আসা সাবেক শিক্ষার্থীদের সৌজন্যে অনেক বিভাগই আয়োজন করেছে স্মৃতিচারণ, আড্ডা অনুষ্ঠান।
সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর তারিকুল হাসান। সমাবর্তন সফলভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সমাবর্তন সংশ্লিষ্টদের ও রাজশাহীবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।
এদিকে, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের উদ্বোধন করবের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫