জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রান্তিক ও ডেইরি গেটের পাশে অবৈধভাবে জায়গা দখল করে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে ভর্তি বিষয়ক শিট ও গাইড বই।
এতে একদিকে যেমন বাড়ছে যানজট, তেমন নতুন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পড়ছেন অসুবিধায়।
বিশ্ববিদ্যালয় এস্টেট অফিস সূত্রে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক ও ডেইরি গেটে প্রতিবছর যেসব অবৈধ অস্থায়ী দোকান বসানো হয় তা এবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসন সীমাবদ্ধ ঘোষণার মধ্যেই। কোনো দেখভাল নেই।
সরেজমিনে রোববার (২০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক ও ডেইরি গেটে গিয়ে দেখা যায়, ভর্তি পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই একদল অসৎ ব্যবসায়ী অবৈধভাবে জায়গা দখল করে গাইড বিক্রি করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশ পথে (ডেইরি গেট) সারিবদ্ধভাবে জায়গা দখল করে গাইড বিক্রি করা হচ্ছে। এতে চলাচলে সমস্যার পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক সৌন্দর্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিটগুলো তৈরি করতে ১২-১৫ টাকা খরচ হয়। শিক্ষার্থীদের কাছে তা বিক্রি করা হয় ৮০-৯০ টাকায়। আর যে বইগুলো তৈরি করতে খরচ হয় ২০-২৫ টাকা তা বিক্রি করা হয় ১২৫-১৩০ টাকায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বছর ভর্তি পরীক্ষা আগে ডেইরি গেটে অবৈধ জায়গা দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সে ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া এখনও চলছে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জুবায়ের টিপু বাংলানিউজকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার আগে এ সব নিষিদ্ধ গাইড বই কিনে কোনো উপকার পায় না ভর্তিচ্ছুরা। শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা বা একদিন আগে এসব গাইড কেনে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের সভাপতি দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোনো শিক্ষার্থী কোনো ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার নিয়ম নেই। কিন্তু সেই নিয়ম ভেঙে ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জড়িত হয়ে শিক্ষার্থীদের ঠকাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা-১) ও ভর্তি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এ সব অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করার জন্য নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের আদেশ করেছি। তবে বেশ কয়েকবার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দোকান উচ্ছেদ করে চলে আসার পর আবার দোকানগুলো বসানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
আরআইএস/এএ