তিনি বলেন, আমরা নিজেদের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করতে যাচ্ছি, বিশাল সমুদ্র সম্পদ সুরক্ষা আমাদেরই করতে হবে, আমরা পদ্মাসেতু নির্মাণ করছি, আমরা গড়ে তুলছি নিজেদের বিদ্যুৎ প্রকল্প আর এসব ক্ষেত্রেই আমাদের প্রয়োজন মেধাবী, দক্ষ, প্রশিক্ষিত জনশক্তি। যা নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র উদ্যোগে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ দেওয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে তিনি ২০১৩ ও ২০১৪ সালে পদক অর্জনকারী ২৩৩ জনের হাতে পদক ও সনদ তুলে দেন।
আর বক্তৃতার শুরুতেই বলেন, স্বাধীনতার এই মাসে দেশের কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে স্বর্ণপদক তুলে দিতে পেরে আমি গৌরব বোধ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব আজ এগিয়ে চলেছে, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েরা এগিয়ে চলবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষার উন্নয়নে নেওয়া উদ্যোগগুলোর কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার নেওয়া পথেই আমরা আমাদের শিক্ষার বিস্তার করে চলেছি।
২০১৩ ও ২০১৪ সালে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বর ও সিজিপিএ-প্রাপ্ত ২৩৩ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রী এই প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পেয়েছেন। ২০১৩ সালের জন্য ১১০ জন এবং ২০১৪ সালের জন্য ১২৩ জন কৃতী শিক্ষার্থী এই পদক পেলেন।
** মেধাবীদের স্বর্ণপদক তুলে দিয়ে গর্বিত প্রধানমন্ত্রী
** প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পেলেন ২৩৩ মেধাবী
মেধাবীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চার্চা ও উদ্বোধনী শক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে। কারিগরি শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়ন করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা আগামী দিনের সোনার বাংলাদেশ গড়তে নেতৃত্ব দেবে। মনে রাখতে হবে- এই দেশ স্বাধীন দেশ। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমরা আত্মসম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচবো।
দেশের শিক্ষক সমাজের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিকে গড়ে তোলার বিরাট দায়িত্ব শিক্ষকদের। আপনারা মানুষ গড়ার করিগর। শুধু শিক্ষার্থীদেরই নয়, আপনাদের জ্ঞান, বুদ্ধি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দিয়ে ছেলেমেয়েদের তৈরি করবেন। ’
সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রধানতম প্রয়োজন শিক্ষার বিস্তার, সব মানুষকে স্বাক্ষর করে তোলা, যা তার সরকার করেছে। ১৯৯৬ এ সরকার গঠন করে শিক্ষার হার বাড়ালে পরের বিএনপি-জামায়াত সরকার তা ফের নিচে নামিয়ে নেয়, সে আক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পরে আবার ক্ষমতায় এসে তার সরকারকে শিক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। তিনি বলেন, শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে জাতি এগিয়ে যাবেই সে চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে তার পিতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যে স্বপ্ন দেখিছিলেন তারিই বাস্তবায়ন করে চলেছেন তিনি ও তার সরকার।
গ্রাম-বাংলায় জরিপ করে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটনানো হয়েছে, প্রাথমিক স্কুল সংস্কার, নির্মাণ, মাধ্যমিকে মেয়েদের পাঠের পরিবেশ সৃষ্টি, শিক্ষক নিয়োগে নারীদের অগ্রাধিকার, মানসম্মত শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, আধুনিক শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থা, স্কুলে স্কুলে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর এগুলো দেওয়া হয়েছে, জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের প্রতিটি জেলায় সরকারি কিংবা বেসরকারি যাই হোক একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার স্বপ্নের কথাও এসময় তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যানরা, ইউজিসির বর্তমান ও সাবেক সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, স্বর্ণপদকপ্রাপ্তদের অভিভাবকরা এবং ইউজিসির কর্মকর্তারা এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
স্বর্ণপদক গ্রহণ করে অনুভূতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বর্তমানে শিক্ষক জেনিফার হাকিম লুপিন ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বর্তমান শিক্ষক সজল রহমান।
** জাতিকে গড়ে তোলার বিরাট দায়িত্ব শিক্ষকদের
বাংলাদেশ সময় ১০৫৩ ঘন্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
এমএমকে