আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে বুধবার (২৯ মার্চ) সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা ও ফেসবুকে প্রশ্নপত্র সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ এ সংক্রান্ত এক সভায় এসব কথা জানান সচিব।
সভায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপকমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে গত দুই মাসে শিক্ষকসহ ২৬ জনকে গ্রেফতার করেছি, তিনটি মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি এ বছরে বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। বিজি প্রেস থেকে ঘটনা ঘটলে সারাদেশে এর প্রভাব পড়ে। গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের পর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান নাজমুল।
এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে মার্চের শুরুতে ফেসবুকে একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছেন জানিয়ে নাজমুল বলেন, ‘আগে আসলে আগে পাবেন। শতভাগ কমন, ইনবক্সে যোগাযোগ করতে বলা হয়…। ’
তিনি বলেন, আমরা তাদের আইডেন্টিফাই করেছি। দুই অ্যাডমিনের নেতৃত্বে এতে ২৫ হাজার সদস্য আছে। আমরা আশা করছি আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে এ চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো। এদের ধরতে পারলে এইচএসসি পরীক্ষা ভালো হবে এবং এসব প্রতারণা থেকে অভিভাবক ও ছাত্ররা দূরে থাকবেন।
পরীক্ষা উপলক্ষে চক্রগুলো এবার ভয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন নাজমুল।
জবাবে সোহরাব হোসাইন বলেন, যারা ফেসবুক অ্যাডমিন বা যারা এর সঙ্গে লিংকড আছেন, যদি তারা ছাত্র হন তাদের ইনফরমেশন আমাদের দরকার। আগামীতে যদি এমন কোনো প্রমাণ পাই যে কোনো ছাত্র এইভাবে পরীক্ষা দিয়েছে তাহলে আমরা তাদেরটা বাতিল করতে চাই।
সচিব বলেন, আগামী প্রজন্ম যদি নষ্টের দিকে এগিয়ে যায়, যদি প্রতিরোধ করতে না পারি, এ দায়দায়িত্ব আমরা কোনোমতে এড়াতে পারবো না। যারা প্রশ্ন হয়তো ফলস বা যে কোনো রকম প্রশ্ন প্রলুব্ধ করছেন, যারা প্রলুব্ধ হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যেতে হবে। কারণ অন্যায় যদি করেন এবং সহায়তা করেন, উভয়ই সমান শাস্তি। আমরা যদি সে পর্যায়ে না যাই তাহলে আমাদের ছাত্র এবং অভিভাবকের মধ্যে ক্ষোভ থেকে যাবে। আমরা সেটাও প্রতিরোধ করতে চাই। যাতে আগামী দিনে কোনো ধরনের ফেসবুকে এ ধরনের অ্যাড দেবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রশ্ন নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া, সে বিষয়েও আমরা ব্যবস্থা নিতে চাই।
এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষে সহায়তা থাকবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল।
এসময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সঠিকভাবে সুনির্দিষ্ট করে তিনি যদি ছাত্র হন, শিক্ষক হন, অভিভাবক হন- আমরা ব্যবস্থা নেবো। কোনো ছাড় দেবো না।
প্রশ্ন ফাঁসের যে আইন আছে তাতে একেবারেই কম শাস্তি জানিয়ে নাজমুল বলেন, তাড়াতাড়ি জামিনে বের হয়। আগামীতে আইনটি আরও কড়াকড়ি করার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
** ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের ছাড় নেই’
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএস