রুহুল আমীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাবেক সভাপতি। সম্প্রতি রুহুল আমীন এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটির হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল হাকিমের মধ্যে কথপোকথনের অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়।
এরই প্রেক্ষিতে রোববার (২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী ওই শিক্ষককে তার দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।
এতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আর কে এম সালেহকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। এছাড়া ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোয়াদ্দার এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলামকে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেষ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রুহুল আমীন ও আব্দুল হাকিমের মধ্যে যে কথোপোকথন হয়েছিল তার কিছু অংশ বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো...
আবদুল হাকিম: কি কচ্ছু
রুহুল: হ্যালো
আবদুল হাকিম: কিরে, কি খবর
রুহুল: কি করিস
আবদুল হাকিম: এই সিনেমা দেখতেছি বসে বসে
রুহুল: ওই আজকের অবজারভারে কিন্তু ফিন্যান্সের সার্কুলার হইছে
আবদুল হাকিম: তা ফিন্যান্সের সার্কুলার হইলে আমি কি হরবো, হে... হে...
রুহুল: তুই ক্যান্ডিডেট ধরবি।
আবদুল হাকিম: দেখমুনি, খোঁজ-খবর নিমুনি।
আবদুল হাকিম: এতো তাড়াতাড়ি সার্কুলার চলে আইছে।
রুহুল: তুই মার্কেটিংয়ে খুঁজলি না।
আবদুল হাকিম: মার্কেটিং... মনে করো যে আটপার-বাটপারদের ভর্তি তো.., অনেকেই বিশ্বাস করে, অনেকেই ট্যাহা কম দিব, এত ট্যাহার কথা হুইনা মাতা ঘুইরা যায়, ট্যাহা ছারাই চাকরি নিবার চায়।
রুহুল: যেডা যেডা এইরম চায় আমাক বলিসতো, চাকরি যাতে জীবনে না হয় সেই ব্যবস্থা আমি করে দেব
আবদুল হাকিম: হুম... ওই যে ওহেনে কিন্তু আমি কইয়া দি, সেলিম মিয়া আমগোরে হুজুর সেলিম মিয়া মার্কেটিংয়ে অ্যাপলিকেশন করছে, জুলফিকার মার্কেটিংয়ে অ্যাপ্লাই করেছে। এগুলার চাকরি হইলে তোগোরি ঘটি-বাটি আউট হইয়া যাইব।
রুহুল: পাগল হাইচ্যাস, এতো সোজা, চাকরি নেওয়া।
আবদুল হাকিম: দেহি ফিন্যান্সে পাওয়া যায় কিনা, খুঁজবানে
রুহুল: তারাতারি, ইকোনোমিক্স এ পাস নাই, ফিন্যান্স এ পাস নাই, মার্কেটিং এ পাস নাই।
আবদুল হাকিম: ওইতো এখানতো বিচিত্র ক্যান্ডিডেট
রুহুল: পলিটিক্যাল সাইন্স, ফোকলোর
আবদুল হাকিম: আবার এখন ট্যাহার কতা হুইনা আইনা, মনে করোন যে শালা তো আমার ট্যাহা-পয়সা নিবরে। চাকরি বাকরি তো কিছুই তা ঠিকই না। ট্যাহা খোঁজে।
রুহুল: চাকরি বাদ দিয়া যদি রাজশাহী যাইয়া বইসা থাকতি, শালার দুইডা সাবজেক্টের প্রত্যেকটায় যদি দুইডা কইরা ক্যান্ডিডেট করলিতো ধর যে চার আর লাখ দশেক টাকা করে ইনকাম করলি আর লাগে। হে... হে...
আবদুল হাকিম: তাতো ঠিকিই
রুহুল: তাই না... আ
আবদুল হাকিম: দেকমুনি, দেকমুনি সমস্যা নাই দেহি, বাইর করোন যায় কিনা
রুহুল: তাইলে দেক খুঁজতে থাক, আর কি অবস্তা।
আবদুল হাকিম: থ্রি ফার্স্ট ক্লাস হইলে চইলবো, থ্রি ফার্স্ট ক্লাস।
রুহুল: ফোর ফার্স্ট ক্লাস বেশি খুঁজবি, থ্রি ঝামেলা হয়ে যায়।
আবদুল হাকিম: ফোর ফার্স্ট ক্লাস তো পাওয়াও মুসকিল। আবার ফোর ফার্স্ট ক্লাস ১৫ লাখ ট্যাহা দেবার রাজিও হয়না।
আবদুল হাকিম: একজোনারতো কতা-বার্তা ছিল, পরে টেহার কতা হুনে তো অজ্ঞান হয়ে গেছে।
রুহুল: ব্যবস্থা করতে হবে চেষ্টা করতে হবে।
আবদুল হাকিম: চাইরডা ফার্স্ট ক্লাস যদি দশে পারোস, তালি পরে আমি যোগাযোগ করতিছি আবার, মার্কেটিং এ, আর ফিন্যান্স এ খুঁজি, দেহি
রুহুল: ওরে বলবি যে আমি চেষ্টা করবো, ১০ না, ১২ পর্যন্ত নিতে হবে, কারণ কিছুতো তোর থাইকতে হবে, থাইকতে হবে না?...
আবদুল হাকিম: এহন দশের কতা কছিলাম, আমি আবার ডাইরেক্ট না করি দিছি, যে দশে তো হবো না।
রুহুল: কে বলছিল
আবদুল হাকিম: আছে একটা ক্যান্ডিডেট, চারটাতেই ফার্স্ট ক্লাস, রাজশাহীরই ক্যান্ডিডেট।
রুহুল: অ্যাপ্লাই করছে?
আবদুল হাকিম: অ্যাপ্লাইতো করছেই
রুহুল: তাইলে ওর সাথে কথা বল।
আবদুল হাকিম: তাইলে আমি একটু খোঁজ নেই, বুঝছু?
রুহুল: তাইলে ওর সাথেই কথা বল, বল যে ঠিক আছে, তোকে কিন্তু আরও দুই এক লাক লাইগতে পারে, এইডা বইলা রাখ।
আবদুল হাকিম: না ১২ পর্যন্ত হইলে তোর কিছু থাকল আর আমি এখানে ১০ পর্যন্ত হইলে কাজ করতে পারি।
আবদুল হাকিম: আচ্ছা অসুবিধা নাই, দেহিস আমি তাইলে কতা কই দেহি।
রুহুল: তুই তাইলে কতা কইয়া এক্কেবারে রেডি করে ফেলবি, টাকা পয়সা সব রেডি করে তারপর আমাকে জানাবি।
আবদুল হাকিম: আমি দোস এহনি কতা কই, কতা কইয়া তোক জানাইতেছি, দেহি কি অবস্থা, শোন ওর ভাববার সময় দিছি।
রুহুল: মার্কেটিং নতুন সাবজেক্ট একেবারে রাজত্ব করতে পারবা, ঢুকলেই এক বছরের মধ্যে চেয়ারম্যান হয়ে যাবা, দরকার হইলে এক নাম্বার করে দিবো, বুঝতে পাইরছিস।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৭
এসআই