এসব বিষয় আমলে নিযে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে (আইএমএল) হিন্দি ভাষার উপর সিনিয়র কোর্স চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে বিভাগ ঘুরে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৭ জুন ভারত সরকারের সহযোগিতায় আইএমএলে চালু করা হয় হিন্দি ভাষা বিভাগ।
বিভাগের অতিথি শিক্ষক হিসেবে আছেন ড. যোগেশ বাশিষ্ট। এছাড়া বিভাগের তথ্যসেবা কেন্দ্র ও সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করেন মো. আবদুল হান্নান সরকার। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচালার রিলেশনের অধীনে বিশ্বের ৩৬টি দেশে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে ইন্ধিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের মাধ্যমে এসব ভাষাশিক্ষার কোর্স ও দু’দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংযোগ স্থাপন করা হয়।
ভাষা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শাহজালাল মিঞা জানান, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয় ব্যাচে হিন্দি ভাষায় ভর্তি রয়েছেন ৮ জন।
দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ আশারফ হিন্দি ভাষা কোর্সের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স করছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এ কোর্সের অনেক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বিশেষ করে আমার গবেষণার ইচ্ছা রয়েছে দু’দেশের বিষয় নিয়ে।
অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকো সত্ত্বেও শুধু প্রচারণার অভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি কম হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
প্রথম বছর প্রচারের কারণে পঞ্চাশজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। বর্তমানে আটজন শিক্ষার্থীর পাঁচজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর বাকিরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। জানান এ শিক্ষার্থী।
বিভাগের শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন ড. যোগেশ বাশিষ্ট। হিন্দি ভাষার কোর্সের বিভিন্ন দিক নিয়ে তিনি বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন। ভাষাশিক্ষা কোর্সের তিনটি উদ্দেশ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারত দু’টি পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে গবেষণায় এ ভাষা কোর্স অনেক সহায়তা করবে। পাশাপাশি দু’দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ও সাহিত্যচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিগগিরই সিনিয়র কোর্স চালু করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে জুনিয়র ডিপ্লোমা কোর্স চালু রয়েছে। জুলাই-আগস্টে নতুন শিক্ষক আসবেন। তিনি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করবেন। তখন সিনিয়র কোর্স চালু করা হবে।
ভাষা শিক্ষার পর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কি ধরনের সুযোগ ভারতে তৈরি হবে- এ সম্পর্কে তিনি বলেন, জুনিয়র কোর্স শেষ করলে ভাষা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বৃত্তির জন্য আবেদন করা যায়। প্রথমে দরকার ভাষাটা ভালোভাবে আয়ত্ত করা। ভাষার দক্ষতা থাকলে পরবর্তীতে কাজের ক্ষেত্র তৈরি হবে।
শুধু ভাষা শিক্ষা ছাড়া সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করা হয় কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই কোর্সে প্রাথমিক স্তরের কবিতা, গল্প পাঠদান করা হয়। এর মাধ্যমে মুখ্যভাবে ভাষা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. এবিএম রেজাউল আলম ফকির বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের পাশ্ববর্তী দেশ হিসেবে সাংস্কৃতিক দিক থেকে ভাষার দিকটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে জুনিয়র কোর্স চালু রয়েছে।
বাংলাদেশে চাহিদার কথা বিবেচনা করে ভারত সরকার হিন্দি ভাষার উপর অনার্স কোর্সসহ উচ্চতর ডিগ্রি চালু করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, ভাষা ইনস্টিটিউটের অধীনে বর্তমানে জুনিয়র কোর্স চালু রয়েছে। সামনে সিনিয়র কোর্স চালু করা হবে। পরবর্তীতে হয়তো অনার্স কোর্সও চালু করা যেতে পারে। যেহেতু হিন্দি ভাষার একটা চাহিদা বাংলাদেশে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
এসকেবি/এএ