ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে নিম্নমানের নষ্ট ওষুধ সরবরাহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

নুর আলম হিমেল, জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৭
জাবিতে নিম্নমানের নষ্ট ওষুধ সরবরাহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জাবি মেডিক্যাল সেন্টার থেকে সরবরাহ করা নষ্ট ওষুধ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মেডিক্যালে সেন্টারে নিম্নমানের নষ্ট ওষুধ সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

এর আগেও গণমাধ্যমে এ নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও কোন কর্ণপাত করছে না বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসান বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করে বলেন, গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে যাই।

সেখানে ডাক্তার ওষুধ লিখে দেন। পরে স্টোর থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে রুমে এসে খেতে গিয়ে দেখি নিম্নমানের পচা ঔষধ।

পরে ওই ওষুধ বাংলানিউজ সংগ্রহ করে মেডিক্যালে কর্তব্যরত এক চিকিৎসককে দেখালে চিকিৎসক এগুলোকে নামহীন কোম্পানির নিম্নমানের নষ্ট ওষুধ বলে চিহ্নিত করেন।

একই সঙ্গে তিনি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, মেডিক্যালের কথা আর কি বলবো। এই সব ওষুধ কোম্পানি ও ওষুধগুলো কোথায় পায় এরা। মেডিক্যালের সহকারী রেজিস্ট্রার (স্টোর) নুরে-এ-কামাল পিংকু এ সব ওষুধ সরবরাহ করে থাকেন।

ফেসবুকে এ নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের আজাদ নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, মেডিকেল  থেকে নিয়ে আসা ওষুধ এডিটিন ও গ্যাসট্যাব। ওষুধের মেয়াদ ২০১৯ সাল থাকলেও ওষুধ গলে নষ্ট হয়ে গেছে। মেয়াদসহ এইসব নষ্ট হয়ে যাওয়া ওষুধ খেয়ে আমরা কি আদৌ সুস্থ হবো না আরও অসুস্থ হয়ে পড়বো?

হুমায়ার জিদান লিখেন, এই ওষুধ খেলে জীবনে আর কোন ওষুধ খাওয়া লাগবে না।

আরিফুজাম্মান লিখেন, আমাদের উপর নাম না জানা কোম্পানির ওষুধগুলোর পরীক্ষা চালায় আরকি?

মাহবুবুর রহমান লেখেন, এর জন্য কিছু করা দরকার, এটা নতুন কিছু না। ডাক্তার লিখে ভালো কোম্পানির, ওষধ দেয় ভুয়া কোম্পানির। কত বড় বদমাইশি!

সৈকত ফকির লিখেন, মার্কেটিং এর আগে ওষুধের স্ট্যাবিলিটি টেস্ট না করলেই এমনই হয়। সবচেয়ে বড় কথা যেসব কোম্পানির ওষুধ আমাদের  মেডিক্যালে দেয়া হয় সেগুলার নাম সেরা ১০০ কোম্পানির মধ্যেও নেই।

জাহাঙ্গীর আলম লিখেন, মন খারাপ থেকে সর্বরোগের মহৌষধ অনলি নাপা ১+০+১ আহারের পর.. এটা ছাড়া কি-ই-বা লিখে এখানে! আবার এখানেও যদি হয় এ অবস্থা। জাবি মেডিক্যাল সেন্টার

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালের ওষুধ ক্রয়ের জন্য একটি কমিটি রয়েছে। তারা বিভিন্ন  কোম্পানির নাম মিটিংয়ে উত্থাপন করেন এবং তা পাশ করিয়ে সেই ওষুধগুলো ক্রয় করতে বলে। সে অনুসারে ওষুধ ক্রয় করা হয়ে থাকে।

কমিটির অনেক সদস্যের অনুরোধ ও আদেশে নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ওষুধ ক্রয় বাবদ সাড়ে ১৭ লাখ টাকার বাজেট করা হয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর সাড়ে তিন থেকে ৪ লাখ টাকার ওষুধ ক্রয় করা হয়ে থাকে।

ওষুধ কিভাবে ক্রয় করা হয় জানতে চাইলে মেডিক্যালের সহকারী রেজিস্ট্রার (স্টোর) নুরে-এ-কামাল পিংকু বলেন, লিস্ট অনুসারে ঔষধ সরবরাহ করা হয়। তবে এ বিষয়ে প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ভাল বলতে পারবে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোজেজা জহুরাকে একাধিকবার টেলিফোন ও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করার হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উপ-প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডা. রিজওয়ানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমরা প্রধান মেডিক্যাল অফিসারকে জানিয়েছি। তিনিই এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে পারবেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়  উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৭
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।