রোববার (১৩ মে) দুপুরে উপজেলার শ্রীবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
প্রধান শিক্ষক নাসিমা খানম বাংলানিউজকে জানান, সম্প্রতি নির্বাচনী তফসিলের মাধ্যমে স্কুলের চারজন অভিভাবক (পুরুষ ও নারী) সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু স্কুলের বিদ্যুতসাহী সদস্য আবুল বাশার অভিভাবক সদস্য যথাযথভাবে নির্বাচন হয়নি মর্মে শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন।
রোববার বেলা ১১ টায় এ অভিযোগের তদন্তে শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুলে আসার কথা ছিলো। কিন্তু সময় পরিবর্তন করে বেলা ২ টায় বাদীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা খন্দকার তার কার্যালয়ে ডাকেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদুৎসাহী সদস্য আবুল বাশার, বড়টিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুল আলম রওশন, মো. শামীম, আব্দুল হাই, পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আ. আজিজের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে অকত্য ভাষায় গালাগালি করেন। এক পর্যায়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এসময় দফতরি মো. হাফিজ প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াজ উদ্দিন জানান, প্রধান শিক্ষকের আত্মচিৎকারে তারা ৫/৭ জন স্কুলে গেলে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। এসময় প্রধান শিক্ষক অনেক কান্নাকাটি করতে ছিলেন। পরে টেলিফোনে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। খবর পেয়ে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক নেতারা ঘটনাস্থলে আসেন।
প্রধান শিক্ষক নাসিমা খানম এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি থানায়ও অভিযোগ করবেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবুল হাসেম জানান, বিদুৎসাহী সদস্য আবুল বাশারকে বিনাভোটে সভাপতি বানানোর জন্যই একটি চক্র নানা অপতৎরতা চালাচ্ছে। নানা কায়দায় তারা দুই দফা নির্বাচন স্থগিত করেছেন। তৃতীয় দফায় তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ মে সভাপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। অথচ বাশার মনোনয়নপত্রই সংগ্রহ করেননি। কিন্তু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন।
এ বিষয়ে বড়টিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত শামছুল আলম রওশন সব অস্বীকার করে জানান, দফতরি হাফিজই তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন।
ঘিওর উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি না হলে উপজেলার সব শিক্ষকদের নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তিনি জানান, এ ঘটনায় ওই স্কুলের শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৮
কেএসএইচ/ওএইচ/