ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জীবনের নিরাপত্তা দাবি কোটা আন্দোলনকারীদের

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
জীবনের নিরাপত্তা দাবি কোটা আন্দোলনকারীদের সংবাদ সম্মেলন করছেন কোটা আন্দোলনকারীরা/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কোটা আন্দোলনের দুই নেতাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে দাবি করে ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা। একই সঙ্গে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ না করায় সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (১৬ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ্ই দাবি জানানো হয়। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শাহবাগ থানায় আন্দোলনকারীরা জিডি করতে গেলে 'সময় লাগবে' বলে জানায় পুলিশ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার (১৫ মে) দিনগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ১১৯ নম্বর কক্ষে কোটা আন্দোলেনের যুগ্ম-আহ্বায়ক নূরুল হক নূর ও রাশেদ খানকে ছাত্রলীগের সদ্যবিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পী, মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম ইসলাম লিমনসহ ১৫-২০ জন এসে হত্যার হুমকি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে নূর বলেন, জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমাদের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) না নেয়াটা পুলিশ বাহিনীর জন্য লজ্জার। আমরা পুলিশের কাছে এটি আশা করি না। জিডি না নিয়ে পুলিশ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। আমাদের নিরাপত্তা জিডি না নিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের এ ধরনের আচরণ ছাত্রসমাজ ভালোভাবে নেবে না।

নিজেদের কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনের শুরু থেকে বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমাদের কর্মসূচি চলমান রয়েছে। প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে। হামলা-মামলা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, আমাদের যারা হত্যার হুমকি দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

কোটা আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান।

এর আগে দুপুর ২টার দিকে শতাধিক আন্দোলনকারী নিয়ে শাহবাগ থানায় জিডি করতে যান কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী নেতারা। থানায় পৌঁছালে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান তাদের একটি কপি দিয়ে জিডি করতে বলেন। একপর্যায়ে তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ৪ নেতা এবং সাধারণ আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার জন্য মোট ৫টি জিডি কপি পূরণ করেন। কপি পূরণ করার পর শাহবাগ থানা ওসির কাছে জমা দিতে চাইলে থানার ওসি সেটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান।

কারণ জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এই জিডিতে ছাত্রসংগঠন জড়িত আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আছে। আমাদের এই জিডি গ্রহণ করতে সময় লাগবে।

অপরদিকে, হত্যার হুমকির প্রতিবাদ জানিয়ে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।

সমাবেশে নরুল হক নূর বলেন, তারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার রুমে গিয়েছিলেন। কিন্তু সাংবাদিকরা উপস্থিত হওয়ায় তারা সেটি পারেননি। হুমকি দিয়ে চলে যান।

গত ৮ ও ৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রসীরা মহড়া দিলেও এর কোনো বিচার প্রশাসন করেনি বলে এসময় অভিযোগ করেন তিনি।

আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, সরকারের ইমেজ নষ্ট করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল এসব (হত্যার হুমকি) কাজ করেছে। হুমকিদাতারা কোটাধারী। তারা চায় না কোটার যৌক্তিক সংস্কার হোক।

এছাড়া তিনি সরকারের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে দ্রুত প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের দাবি জানান। এসময় উপস্থিত আন্দোলনকারীরা হত্যার হুমকিদাতাদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
এসকেবি/এএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।