নতুন জীবনযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন তারা। পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ পুনর্বাসন কেন্দ্রে তৈরি করেছে চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয় ভবনগুলো তৈরি করা হয়েছে নজড়কারা আধুনিক ডিজাইনে। মনোরম পরিবেশ যেন শিক্ষার্থীদের বাড়তি আগ্রহ যোগায়। প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চলছে এখানে। ২০১৭ সালের ১ মার্চ যাত্রা শুরু করে বিদ্যালয়গুলো। এখানকার শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের। এসব শিশুর অভিভাবকরা স্বল্প শিক্ষিত হলেও সন্তানদের উচ্চ শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখছেন তারা। এসব বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে অটিস্টিক শিশুরাও।
অভিভাবকরা বাংলানিউজকে জানান, ভিটেমাটি ত্যাগ করে এখানে নতুন পরিবেশে এসে ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে শঙ্কা ছিল তাদের। তবে এখন বাড়ির পাশেই উন্নতমানের চারটি বিদ্যালয় নির্মিত হওয়ায় তাদের শঙ্কা দূর হয়েছে। স্বপ্নের পদ্মাসেতুর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে উচ্চ শিক্ষার পথে এগিয়ে যাবে। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকই তরুণ। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা ডিজিটাল বাংলাদেশের সব শৈল্পিক নির্দশন এ স্কুলের পরিবেশকে ছুয়ে যায়।
পুনর্বাসন কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ পদ্মাসেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫৬, লৌহজং উপজেলার যশলদিয়া পদ্মাসেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৬৯, শরীয়তপুরের নাওডোবা পদ্মা সেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩১৬ এবং মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাকরেরকান্দি পদ্মাসেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৬০। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগসহ যাবতীয় কাজ হচ্ছে রিক এনজিও এর মাধ্যমে।
কুমারভোগ পদ্মাসেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, অভিভাবকদের জন্য রয়েছে মনোমুগ্ধকর বসার স্থান। স্কুলের চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন ফুল ও ফলের গাছ। শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা ও হাতের লেখা সুন্দর করার ব্যাপারে শিক্ষকরা বিশেষ যত্নবান। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে সাধারণ জ্ঞান ও সাংস্কৃতিক চর্চার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষকরা বিশেষ দিনগুলোতে নানা আয়োজন করেন। বিদ্যালয়ে পাঠদান চলে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এখানে চার নারী ও একজন পুরুষ শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তাদের জন্য পৃথক কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়া হয়। মেধাবীদের জন্য রয়েছে উপবৃত্তির ব্যবস্থা। স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষকরা যত্ন ও আন্তরিকতার সঙ্গে শিশুদের ক্লাস নিয়ে থকেন। ফলে শিশুরা এখানে আনন্দের সঙ্গে লেখাপড়া করছে। প্রতিদিনই হাজিরা খাতায় উপস্থিতি থাকে প্রায় শতভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৮
এসআই