দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া দলগুলো/ছবি- শাকিল আহমেদ
ঢাকা: হাতে কোন চিরকুট বা নোট নেই। প্রতিপক্ষ দল যখন বিতর্কে প্রশ্ন ছুড়ছে, তখন সেগুলোও নেওয়া হচ্ছে না টুকে। অথচ উত্তর দেওয়ার সময় বা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে তথ্যের ঘাটতি নেই একটুও। ছেড়ে যাচ্ছে না বিপক্ষ দলের প্রশ্নগুলোও। প্রতিযোগীরা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও তাদের মেধার যে মননশীলতা, তাতে হতবাক হওয়া ছাড়া আর কিছু থাকে না।
দেশে প্রথমবারের মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজন করে বিতর্ক প্রতিযোগিতার। শুক্রবার (১০ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) অনুষ্ঠিত হলো আয়োজনের গ্র্যান্ড ফিনাল ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
ছায়া সংসদের আদলে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী এবং সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। প্রতিযোগিতায় সভাপতি হিসেবে মক পার্লামেন্টটিতে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ‘প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে’ শীর্ষক বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন হয় বিতর্কের পক্ষে অবস্থান করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। রানার্স আপ হয় বিপক্ষের দল রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ। আয়োজনে তৃতীয় স্থান অধিকার করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। আয়োজনে প্রতিবন্ধীদের অধিকার আদায় এবং তাদের সুরক্ষায় বেশ কিছু দাবিও উত্থাপন করা হয়। প্রতিযোগিতার প্রধান অতিথি মোজাম্মেল হক বলেন, দেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে যদি আমরা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে চাই, তবে তা ব্যর্থ হবে। আমরা তাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করাতে পারলে তাদের পাশাপাশি দেশও এগিয়ে যাবে। এটা ঠিক যে তারা আলো দেখে না, কিন্তু তাদের হৃদয়ের গভীরতা অনেক বেশি। তাই তাদের নিয়ে এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রণোদনা সৃষ্টি হবে। শিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ বলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করলেও সেটা অনেক দেরিতে শুরু হয়েছে। এটা আগের কোন সরকার উদ্যোগ নিলে আমরা আজ অনেক দূর এগিয়ে যেতাম। তবে বর্তমানে অনেক কাজ হচ্ছে তাদের নিয়ে। ব্রেইল পদ্ধতিতে বইগুলো এখন পর্যন্ত শুধু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত থাকলেও তা শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়েও চলে আসবে। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের সদিচ্ছা আছে, এখন শুধু আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন, রানার্স আপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারী দলকে যথাক্রমে নগদ দুই লাখ, এক লাখ এবং ৫০ হাজার টাকাসহ ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও ট্রফি দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলায় সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮ এইচএমএস/জেডএস
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।