বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল অনশনকারী শিক্ষার্থীর পাশে থাকার ঘোষণা দেন। আখতার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এসময় রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে চারটি দাবি পেশ করা হয়। সেখানে বলা হয় ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নফাঁসের প্রতিবাদে আমরণ অনশনকারী আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আখতার হোসেনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি আমরা। ‘ঘ’ ইউনিটের ফলাফর বাতিল করতে হবে,পরীক্ষা পুনরায় নিতে হবে, প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে, বিগত বছরে যারা জালিয়াতি করেছে তাদের চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, আমি তার সঙ্গে যখন কথা বলছি তখন মনে হলো আখতার কাঁদছে কেন। আসলে তার শিক্ষকরা অর্থাৎ, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সার্বিকভাবে কতটা অমানুষ হয়ে গেছি, কতটা অসংবেদনশীল হয়ে গেছি, কতটা অনাচারী হয়ে গেছি, এটা অনুধাবন করে কাঁদছে আখতার হোসেন।
তাকে কেউ দেখতে আসেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে এটার প্রতিবাদে একটা ছেলে বসে আছে, কেউ তাকে দেখতে আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই দায়িত্ব অনুভব করছে না। এরচেয়ে দুর্ভাগ্য আর কি হতে পারে। আখতার এই ইউনিভার্সিটির ছাত্র। এই ইউনিভার্সিটির প্রতিটি ছাত্রের দেখাশোনা করা, নিরাপত্তা দেওয়া, ভালো-মন্দ দেখা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। এটি প্রতিটি শিক্ষকের দায়িত্ব। আমরা এই দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছি।
আখতারের কাছে আমার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের আরো আগে আসা উচিত ছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি অহংকার মাত্র অবশিষ্ট আছে। সবচেয়ে বড় অহংকারটা হলো আমরা ভর্তি পরীক্ষাটা ভালোভাবে গ্রহণ করতাম। আমরা গর্ব করে বলতাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাটা সুচারুভাবে হয়। আজ সেখানে আঘাত লেগেছে। সেখানে যদি আঘাত লাগে আমাদের সবার প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। এবং অবশ্যই ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করা উচিত ছিল।
‘আমরা যদি এই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফর গ্রহন করি তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে যে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করা যায়, কারচুপি করা যায়, অন্যায় করা যায়, অন্যায়ভাবে এখানে ভর্তি হওয়া যায়। ’
১৬ অক্টোবর ‘ঘ’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ২৬.২১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেন। ১২ অক্টোবর এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার আগের দিনই প্রশ্ন ‘ফাঁস’ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করে।
পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাম সংগঠনগুলো। পরীক্ষা বাতিল না করলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এছাড়াও গতকাল রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী অনশনকারীর দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২১০৮
এসকেবি/এএ