ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত না হলে নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে অনুষ্ঠিত রাকসু সংলাপ কমিটির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা।
ছাত্রদলের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো- রাকসু নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাস ও হলে সহাবস্থান নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ছাত্র সংগঠন ও সর্বদলীয় শিক্ষকদের সমন্বয়ে পরিবেশ পরিষদ গঠন করে কমপক্ষে ৬ মাস সহাবস্থান পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা, ক্যাম্পাস ও হল থেকে পুলিশ ক্যাম্প প্রত্যাহার করা, কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীতার সুযোগ দেয়া, রাকসুর সভাপতি ও কার্যনির্বাহী সদস্যর ক্ষমতার ভারসাম্য করা, নির্বাচনের আগে আবাসিক হলে বহিরাগতদের অবস্থান নিষিদ্ধ করা, ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের অবাধ বিচরণ ও সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ দেয়া, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে সব মতাদর্শের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট সর্বদলীয় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক গঠন করা ইত্যাদি।
সংলাপ শেষে সংগঠনটির রাবি শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী সানিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু ও ক্রিয়াশীল রাজনীতির জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগই হর্তাকর্তা। হলে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক বিবেচনায় সিট দিয়ে রাজনীতি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ক্যাম্পাস ও হলসমূহে রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষে আমরা ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে। ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিতসহ আমাদের দাবি-দাওয়ার বাস্তবায়ন না হলে আমরা রাকসু নির্বাচনে অংশ নেবো না। ’
ডাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সহাবস্থান না থাকলে নির্বাচনে অরাজক পরিস্থিতির তৈরি হবে। ডাকসু নির্বাচনে আমরা দেখেছি কিভাবে কারচুপি করা হয়েছে। রাকসু নির্বাচনে আমরা এমনটা প্রত্যাশা করি না। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগে সহাবস্থান নিশ্চিত করুক। ছাত্র সংগঠগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিতের পর কমপক্ষে ৬ মাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি যদি অনুকূল হয়, তবেই যেন নির্বাচন দেয়া হয়। ’
সংলাপ কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদলের দাবিগুলো যৌক্তিক। তারা সহাবস্থান নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহাবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহাবস্থান নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেবে। সব ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সহাবস্থান নিশ্চিতের পরই রাকসু নির্বাচন দেয়া হবে। ’
সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রাকসু সংলাপ কমিটির সদস্য সচিব আবু সাঈদ মো. নাজমুল হায়দার, রাকসুর কোষাধ্যক্ষ মীর ইমাম ইবনে ওয়াহেদ এবং ছাত্রদলের পক্ষে রাবি শাখার যুগ্ম সম্পাদক রাশেদ আলী, সামসুদ্দিন চৌধুরী সানিন, প্রচার সম্পাদক মেহেদি হাসান খান, উপ-আইন সম্পাদক আহসান হাবিব প্রমুখ।
উল্লেখ্য, রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে রাকসু সংলাপ কমিটি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৯
আরএ