এরমধ্যে একটি ‘শহীদ আখতার আলী মুন হল’ ও অন্যটি ‘শহীদ তিতুমীর হল’। হল দু’টির মেরামত ও সংস্কার কাজ এখনো চলছে।
তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় কলেজের সবচেয়ে পুরানো হল হিসেবে পরিচিত ‘শের-ই বাংলা হল’ মেরামত ও সংস্কার কাজ করেও ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব হবে না। তাই এই হলটি বন্ধই থাকছে সূত্র মতে।
প্রায় ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর এই হল দু’টি মেরামত ও সংস্কারের কাজ করছে। মেরামত ও সংস্কার কাজ শেষে হল বুঝে পাওয়ার পরই মূলত সিট বরাদ্দের প্রক্রিয়া শুরু করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১৬ মার্চ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে হল খুলে দেওয়ার খবরে কলেজের সাধারণ ছাত্ররা খুশি। তবে কেউ কেউ দুশ্চিন্ততাও প্রকাশ করেছেন। কারণ কিসের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের মধ্যে সিট বরাদ্দ করবেন সে বিষয়টি নিয়ে। তবু কর্তৃপক্ষের নেওয়া সিদ্ধান্তে খুশি তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২০ ডিসেম্বরের ঘটনা। ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মূলত এরপরই ছাত্রদের থাকার হলগুলো বন্ধ করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে ওই সময় হল ত্যাগে বাধ্য হন ছাত্ররা। যদিও ২০১০ সালের দিকে হলগুলো খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সেই রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কায় হলগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ায় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে আজ অবধি হলগুলো বন্ধ রয়েছে।
মাঝখানে দুর্ভোগে পড়েন ছাত্ররা। দূরের ছাত্রদের জন্য ভারি হয় ভোগান্তির পালা। হলগুলোর দেয়ালজুড়ে ঠাঁই নেয় আগাছা আর পরগাছা। হলে দু’টির ভেতর-বাইরে আর আশেপাশ হয়ে ওঠে মাদকসেবীদের আখড়া। প্রহরী-কর্মচারি সরে নেওয়ায় নজর পড়ে দুর্বৃত্তদের। দরজা-জানালা, বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদিসহ হলগুলোর কোনো কিছুই চুরি করতে বাদ রাখেনি দুর্বৃত্তের দল।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, হলগুলো খুলে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ ছাত্ররা দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে। তাদের দাবি মুখে কর্তৃপক্ষ হলগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালে হলগুলো মেরামত ও সংস্কারের জন্য সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর সংশ্লিষ্টরা হলগুলো পরিদর্শন করে সত্তর দশকের দিকে নির্মিত ‘শের-ই বাংলা হল’ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।
অর্নাসের ছাত্র শামীম বাংলানিউজকে বলেন, কর্তৃপক্ষের হল খুলের দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা শোনার পর থেকে খুব ভাল লাগছে। কারণ ব্যক্তি মালিকানাধীন ছাত্রবাসে থাকতে গিয়ে তাদের ব্যয় অনেক বেশি হচ্ছে। পাশাপাশি অনেক ছাত্রবাসেই তেমন একটা নিরাপত্তা নেই।
এনামুল হক তারেক নামে আরেক ছাত্র বাংলানিউজকে বলেন, যদি ছাত্র সংগঠনগুলো সহাবস্থানে থেকে রাজনীতি করে তাহলে তার মতো সাধারণ ছাত্রের কোনো সমস্যা হয় না। মনে ভয় জাগে না। হল নিয়ে কোনো ঝামেলা হয় না। তবু নিজ কলেজের নিজ হলে থাকতে পারটা অবশ্যই অনেক খুশির ব্যাপার।
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহজাহান আলী বাংলানিউজকে জানান, মেরামত ও সংস্কার কাজ শেষে হলগুলো বুঝে পাওয়ার পরপরই হলে থাকতে আগ্রহী ছাত্রদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়া হবে। নিয়ম মেনে আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর নিয়ম মেনেই আবেদনকারী ছাত্ররা সিট বরাদ্দ পাবেন। এ নিয়ে ছাত্রদের চিন্তার কোনো কারণ নেই যোগ করেন অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী।
বাংলাদেশ সময়: ১০২২ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৯
এমবিএইচ/এএটি