ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বিদ্যালয় পেয়ে খুশি দেলুটিবাসী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
বিদ্যালয় পেয়ে খুশি দেলুটিবাসী বিদ্যালয়টি নতুন করে গড়া হয়েছে

খুলনা: খুলনার পাইকগাছা উপজেলার নদীবেষ্টিত প্রত্যন্ত গ্রাম দেলুটি। পানি পথ পেরিয়েই যেতে হয় গ্রামটিতে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে বাঁচে গ্রামটির ১০ হাজার বাসিন্দা। মাছ শিকার ও কৃষিকাজই তাদের প্রধান জীবিকা।  
এ গ্রামে রয়েছে মাত্র একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। জনাকীর্ণ ছিল বিদ্যালয়টির ভবন। আর সুপার সাইক্লোন আম্পানে একেবারে ভঙ্গুর হয়ে যায় পুরো ভবন। ক্ষীণ হয়ে যায় ১০ হাজার মানুষের আশা।

তবে দেলুটিবাসীর আশা শেষ হয়ে যেতে দেয়নি কান্ডারী নামক একটি সংস্থা। তাদের কল্যাণে আজ নতুন ভবন পেয়েছে গ্রামটির শিক্ষার্থীরা। আর এতেই খুশি গোটা গ্রাম।

দেলুটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত কুমার বলেন, আম্পানেরপর আমাদের উচ্চ মাধ্যমিকের ভবনটি পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে যায়। কান্ডারীর কল্যাণে আমরা নতুন ভবন পেয়েছি। আমাদের আশা এখনো টিকে আছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলটি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। শিক্ষকরা অনেকটা স্বেচ্ছাসেবকের মতো এখানে কাজ করেন। আমরা সংসার চালাতে খণ্ডকালীন চাকরি করি। যখন বাচ্চারা আমাকে ‘স্যার’ বলে ডাকে, ভালো কলেজে ভর্তি হয় এবং ভালো চাকরি করে, তখনই আমাদের সফলতা।
নতুন ভবেন স্কুল ফিরেছে তার চিরচায়িত রূপে। ফের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে বিদ্যালয়টি। স্কুলে যেতে পেরে খুশি সব শিক্ষার্থী।

আবার স্কুলে যেতে পেরে আনন্দে আত্মহারা দেলুটি বিদ্যালয়ের ছাত্রী শুষ্মিতা সরকার। সে বলে, স্কুল ফিরে পেয়ে আমরা খুব খুশি। আমরা নতুন কিছু শিখতে পারছি। আমি বড় হয়ে শিক্ষক হতে চাই। আমি যা জানি, তা শেখাতে চাই।

দেলুটি বিদ্যালয়ের সভাপতি মনোজ কুমার রায় বলেন, আম্পানের আগে আমাদের স্কুলে প্রায় শ'দুয়েক ছাত্র-ছাত্রী ছিল। এরপর আবার করোনা আঘাত হানলো। তবে আমাদের ছেলে-মেয়ে কিন্তু কমেনি। তারা স্কুলে আসতে পেরে বেজায় খুশি।
স্কুলটি এমপিওভুক্ত করবে সরকার, এটাই আমাদের একমাত্র দাবি।  

কান্ডারীর প্রতিষ্ঠাতা আফসারা তাসনীম আলভী বলেন, মানুষের মুখে হাসি ফোটানো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভালো লাগার অনুভূতি। প্রচেষ্টা অমূল্য হয়ে যায়, যদি এটি শিশুদের সুবিধার জন্য হয়। বৈষম্য এবং ধ্বংসের এ পৃথিবীতে আমাদের সবারই উচিত যথাসাধ্য চেষ্টা করা, যাতে শিশুরা তাদের স্বপ্ন পূরণ করার সুযোগ পায়। আম্পানে ভেঙে যায় বিদ্যালয়টি

মানুষের মুখে হাসি ফোটানোয় কান্ডারী নামক অর্গানাইজেশনটির কাজ। দেশ ও বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে বিদ্যালয়টির কাজ শুরু করে কান্ডারী। যা প্রায় সমাপ্তের পথে। প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা ব্যয়ে স্কুলটি ফিরে পেয়েছে তার চিরাচরিত রূপ। স্কুলের আঙিনায় হচ্ছে শিশু-কিশোরদের কলরব। আর এতেই খুশি গ্রামটির ১০ হাজার মানুষ। ক্ষত ভরা বুক পাচ্ছে স্বস্তির নিঃশ্বাস।

২০১৯ সালে কান্ডারী নামক অর্গানাইজেশনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুল ছাড়াও তারা বিভিন্ন সেবামূলক কাজে জড়িত। করোনাকালে মানুষদের অর্থ ও খাবার দিয়ে সহায়তা করে। এছাড়া শীতে রংপুরে কম্বল বিতরণ করে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
এমআরএম/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।