ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

রসিক ভোট: প্রচারের সময় ১৭ দিন

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
রসিক ভোট: প্রচারের সময় ১৭ দিন রসিক ভোট: প্রচারের সময় ১৭ দিন

ঢাকা: আসন্ন রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা প্রচারের সময় পাচ্ছেন ১৭ দিন। এক্ষেত্রে গতবারের চেয়ে এবারের প্রার্থীরা একদিন বেশি সময় পাচ্ছেন।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ভোটের তফসিল অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা প্রচারে নামতে পারবেন। আর প্রতীক বরাদ্দ হবে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর)। এক্ষেত্রে প্রতীক পেয়ে এদিন থেকে প্রচার শুরু করতে পারবেন যে কোনো প্রার্থী। আর এ প্রচার বন্ধ হবে ভোটগ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা পূর্বে।

রসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে আগামী ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায়। এর ৩২ ঘণ্টায় পূর্ব বলতে বোঝায় ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত সাড়ে ১২টা।

আইন অনুযায়ী, প্রার্থীদের প্রচারের সময়কাল হবে প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে ৯ ডিসেম্বর থেকে আগামী ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগেরবার অর্থাৎ ২০১৭ সালে রসিক নির্বাচন হয়েছিল ২১ ডিসেম্বর। আর প্রার্থীদের প্রচার শুরু হয়েছিল ৪ ডিসেম্বর, যা শেষ হয়েছিল ১৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে। সে বার প্রচারের সময় ছিল ১৬ দিন।

প্রচারে আইন যা বলে:

নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লাউড স্পিকারে প্রচার চালানোর বিধান আছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ডে প্রচার কাজ বা পথসভার জন্য একটি মাইক ব্যবহার করতে পারবেন প্রার্থীরা।

মেয়র পদপ্রার্থী প্রতি থানায় একের অধিক ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন না। কাউন্সিলর প্রার্থীরা ৩০ হাজার ভোটারের জন্য একটি ক্যাম্প, তবে সর্বোচ্চ তিনটি ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ক্যাম্প অফিসে টেলিভিশন, ভিসিআর, ভিসিডি ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না। ভয়ভীতি প্রদর্শন, ধর্মীয় উপাসনালয়, সার্কিট হাউজ, সরকারি স্থাপনা ব্যবহার করে প্রচার চালানো যাবে না। প্রচার কাজে যান চলাচলে বাধাগ্রস্ত করা কিংবা কারো ব্যক্তিগত সম্পদের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকতে হবে।

পোস্টাল ঝুলিয়ে প্রচার চালাতে হবে। দেওয়ালে বা কোনো স্থাপনায় সাঁটানো যাবে না। পোস্টারের সাইজ দৈর্ঘ্য ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটার হতে হবে।

সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। তবে এদের কেউ ভোটার হলে ভোট দিতে পারবেন।

কোনো প্রকার বিলবোর্ড বা মিছিল করা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে আচরণ বিধিতে। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা, সরকারি প্রচারযন্ত্র কিংবা প্রচারে সরকারি কর্মচারিকে ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতীক হিসেবে জীবন্ত কোনো প্রাণী ব্যবহার নিষিদ্ধ।

নির্বাচনী আচরণ অনুযায়ী, প্রার্থী বা প্রার্থী পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি পথসভা ও ঘরোয়া সভা ব্যতিত কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। এজন্য ২৪ ঘণ্টা পূর্বে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া যানবাহন সরকারে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বা কোনরুপ শোভাযাত্রা করা যাবে না।

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমান বা ছয়মাসের কারদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর দল বা দলের পক্ষে কোনো প্রতিষ্ঠান বিধিমালা লঙ্ঘণ করলে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে।

এছাড়া কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে নির্বাচনের পরেও সেই প্রার্থীর প্রার্থিতাও সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বাতিল করতে পারে নির্বাচন কমিশন। আইন অনুযায়ী, এসব বিধিমালা প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য যে কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

রসিক নির্বাচনে মোট প্রার্থী সংখ্যা রয়েছে ২৭০ জন। এক্ষেত্রে মেয়র পদে নয় জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৯২ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ভোটের মাঠে।

মেয়র পদে নয় প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন।

এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন। সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ২২৯টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর এ সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। সে মোতাবেক এ সিটির বর্তমান নির্বাচিতদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২২
ইইউডি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।