দেশের নির্বাচনে রাজনৈতিক শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনি আচরণবিধি প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এ পরামর্শ দেন।
গীতি আরা নাসরীন বলেন, রাজনৈতিক শিষ্টাচারের অভাব আমরা প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ করছি। অনেক সময় এমন বক্তব্য প্রচারিত হয়, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহন করে না। আগের সময়ে হয়তো এমন মন্তব্য হতো, কিন্তু তখন মিডিয়ার বিস্তৃতি কম হওয়ায় ব্যাপকভাবে তা ছড়িয়ে পড়ত না। এখন সামাজিক মাধ্যমে এই ধরনের বক্তব্য বহুগুণিত হয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।
তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে আমাদের একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যেখানে পারস্পরিক সম্মান বজায় থাকবে এবং ঘৃণাসূচক বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এড়ানো হবে। এই আচরণবিধি শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের একতরফা নির্দেশে তৈরি হলে কার্যকর হবে না; বরং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এটি প্রণয়ন করতে হবে। তবেই এটি গ্রহণযোগ্য হবে এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠা পাবে।
সাইবার প্রযুক্তি প্রসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, বর্তমানে প্রচুর ভুয়া তথ্য, ভুল তথ্য, ফেক ইমেজ এবং এআই-নির্ভর বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। নির্বাচনের সময় এগুলোর প্রভাব আরও বৃদ্ধি পাবে। দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, বিশেষজ্ঞ ও রিসোর্স ব্যবহার করলে এ ধরনের ফেক নিউজ ও এআই-নির্মিত ভুয়া কনটেন্ট প্রতিরোধ করা সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্য কার্যকর গণমাধ্যম অপরিহার্য। নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যম যেন সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে এবং সংবাদ সংগ্রহ করতে পারে, যাতে কোনো ভ্রান্ত ধারণা তৈরি না হয়। নির্বাচনের প্রস্তুতি, ভোটগ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ—সবক্ষেত্রেই গণমাধ্যমের সঠিক ভূমিকা জরুরি।
গীতি আরা নাসরীন আরও বলেন, প্রতিনিধিত্বশীল গণমাধ্যম থেকে সম্পাদক, সিইও এবং নীতিনির্ধারণী ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা করে একটি গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করা গেলে তা কার্যকর হবে। এতে নির্বাচনী কাঠামোতে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে এবং সাধারণ মানুষও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাবে, ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে।
সংলাপে শিক্ষাবিদ, চারজন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ অন্যান্য প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
ইইউডি/এমজে