ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

বাঁশরীর উদ্যোগে মঞ্চায়িত হলো কাজী নজরুলের ‘সেতু-বন্ধ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩
বাঁশরীর উদ্যোগে মঞ্চায়িত হলো কাজী নজরুলের ‘সেতু-বন্ধ’

ঢাকা: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কবি ও সঙ্গীত স্রষ্টা হিসেবে সমধিক পরিচিত। তার সৃষ্টিশীল জীবনকালে (১৯২০-১৯৪২) তিনি অনেক নাটক রচনা করেছেন এবং নিজের নাটকের পাশাপাশি অন্য নাট্যকারের নাটক মঞ্চায়নের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।

বাঁধ দিয়ে পদ্মা নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৩০ সালের দিকে রচনা করেছিলেন নাটক ‘সেতু-বন্ধ’। কবির এই নাটকটি ঢাকার মঞ্চে এবার মঞ্চায়িত করলো বাঁশরী রেপার্টরি থিয়েটার।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হয় এই নাটকটি। কাজী নজরুল ইসলামের এই নাটকটি মঞ্চে নির্দেশনা দিয়েছেন স্বনামধন্য নাট্য ব্যক্তিত্ব গোলাম সরোয়ার। নাট্যভাবনা ও পরিকল্পনা করেছেন ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান। নাটক নির্মাণের বিভিন্ন দায়িত্বে ও অভিনয়ে আছেন সুপরিচিত ও দক্ষ নাট্য শিল্পীরা। এটি ছিল ‘সেতু-বন্ধ’ নাটকের প্রথম শো।

নাট্য নির্দেশক গোলাম সারোয়ার বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের নিকট প্রধানত কবি, সুরস্রষ্টা এবং গীতিকার হিসাবে পরিচিত। এর বাইরেও তাঁর অমর সৃষ্টি ভাণ্ডার রয়েছে। ছোট গল্প, বড় গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি। রচনার তালিকায় নাটক খুবই কম। তারপরও তার নাটকগুলোর মধ্যে ‘সেতু-বন্ধ' একটি অসাধারণ নাটক। প্রত্যেক নাট্যকারের নাটকে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে। কবি নজরুলের নাটকের বেলায় থাকবে না তা তো নয়। সেতু-বন্ধ কবির একটি অনবদ্য সৃষ্টি। এ নাটকে কবিতা, গান, আবৃত্তি, নৃত্য মিলেমিশে একাকার হয়েছে অথচ তা নৃত্যনাট্য নয়, আবার গীতিনাট্যও বলা যাবে না। এমন একটি অসাধারণ নাটক মঞ্চায়ন করতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।  

বাঁশরী নজরুল চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি ও নাটক মঞ্চায়নের উপদেষ্টা ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গল্প-উপন্যাস থেকে দুই-একটি রূপান্তরিত নাটক মঞ্চস্থ বা টেলিভিশনে প্রচারিত হলেও কবি রচিত নাটক মঞ্চে অনুপস্থিত। দুই বাংলার জন্যই কথাটা সত্য। এমন অবস্থায় আমরা বাঁশরী (একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র) থেকে নাটক মঞ্চস্থ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। ‘সেতু-বন্ধ’ প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা-বিষয়ক নাটক।  

নাটকের কাহিনীতে দেখা যায়, স্বর্গের দেবী পদ্মা জানতে পারেন স্বচ্ছ জলরাশি নিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীতে যন্ত্রদানবকুল বাঁধ নির্মাণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পদ্মা দেবী এই অপমান সইবেন না। পদ্মার গতিবেগ রুখে দিয়ে জলাশয়কে নষ্ট করে দেওয়া দানব কুলের অভিলাষকে রুখে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে মেঘরাজ পবন ও অন্যান্য দেবতাদের সহায়তা প্রত্যাশা করেন তিনি। মেঘরাজ, পবন, ঝঞ্ঝা, তরঙ্গ সেনাদল নিয়ে পদ্মা দেবীর সহায়তায় এগিয়ে আসেন মেঘদেবী। শুরু হয় তুমুল লড়াই। লড়াইয়ে বিধ্বস্ত হয়ে যায় দানবকুলের ষড়যন্ত্র, স্বর্গরাজ্য প্রবেশের সকল প্রচেষ্টা হয়ে যায় ব্যর্থ। তবুও মৃত্যু-কাতর কণ্ঠে যন্ত্রদানব উচ্চারণ করে আমার মৃত্যু নেই দেবী, আমি আবার নতুন দেহ নিয়ে ফিরে আসব। পদ্মা দেবীও জবাব দেন- জানি যন্ত্ররাজ, তুমি বারেবারে আসবে কিন্তু প্রতিবারেই তোমার এভাবে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে ফিরে যেতে হবে।

শরতের সন্ধ্যায় নাট্যাঙ্গনের বিশিষ্ট অভিনেতা অভিনেত্রী কলাকুশলীদের নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৩
এইচএমএস/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।